সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

সহীহ হাদিসের আলোকে ইমাম মাহদি (আঃ)-এর আগমন-ভবিষৎবাণী
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ১৫/০২/২০১৮

হযরত ইমাম মাহদি (আঃ) এর পরিচিতি :

♦নাম ও বংশ :
.
উনার প্রকৃত নাম মুহাম্মদ। (আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬০১)। উপনাম : আবু আব্দুল্লাহ / আবুল কাশেম। উপাধি : মাহদি (আঃ)।
.
হাদিসে এসেছে, মাহদি আমার বংশে ফাতেমা’র সূত্রধরে আগমন করবে। (আবু দাউদ, হাদিস নং ৩৬০৩/৪২৮৪)।
.
হাদিসে আরো এসেছে “মাহদি আমার বংশে হবে। কোনো এক রজনীতে মহান স্রষ্টা তাঁকে ঐশ্বর্য দান করবেন ও সংশোধন করবেন।” (সুনানে ইবনে মাজাহ, বিশৃঙ্খলা অধ্যায়; হাদিস নং ৪০৮৫, সনদ সহিহ) ।
.
উম্মুল মু’মিনীন হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, আশ্চর্য হচ্ছি এ ভেবে যে, আমার উম্মতের মধ্য হতে একটি দল বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করতে অগ্রসর হবে। যখন তারা মরুপ্রান্তর পাড়ি দেবে তখন তাদেরকে জমিনের ভেতর ধসিয়ে দেয়া হবে।” (সহিহ বুখারি, ব্যবসা অধ্যায়, বাজার পরিচ্ছেদ এবং সহিহ মুসলিম, হা/২৮৮২ ফেতনা অধ্যায়, তিরমিযী হা/১২৭৬) ।
.
এখানে বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তি বলে ইমাম মাহদি (আঃ)-কেই বুঝানো উদ্দেশ্য। কারণ তিনি কুরাইশী এবং কেয়ামত পূর্বমুহূর্ত আল্লাহ তায়ালার সম্মানিত খলিফা।
.
♦জন্ম ও জন্মভূমি :
.
তিনি স্বাভাবিকভাবে মানুষের মতই মাতাপিতার ওরসে জন্ম লাভ করবেন। তাঁর জন্মস্থল নিয়ে মতভেদ রয়েছে। তবে কানজুল উম্মাল কিতাবের (হা/৩৯৬৭১) দুর্বল একটি রেওয়ায়েত দ্বারা বুঝায় যে, তাঁর জন্মস্থল হবে ‘মদিনা’।
.
তবে হযরত ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন “হে কূফাবাসী তোমরা ইমাম মাহদি’র আগমনে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান।” এতে এও বুঝা যায় যে, কূফা শহর তাঁর জন্মস্থল হতে পারে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/৩৩১২১ এবং ৩৮৭৯৮)।

কিন্তু সহিহ রেওয়ায়েত দ্বারা এটি সুস্পষ্ট নয়। তাই মতভেদ হওয়া স্বাভাবিক।
.
♦ইমাম মাহদির বৈশিষ্ট্য : 
.
তাঁর শারিরীক গঠন মধ্যম আকৃতির হবে। ললাট দীপ্তিময়, উজ্জ্বল, ডাগর চক্ষুবিশিষ্ট। সম্মুখের উজ্জ্বল দাঁতগুলো ফাঁকা। ঘন দাড়ি বিশিষ্ট। সাদা ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করবেন ইত্যাদি। তখন তাঁর বয়স থাকবে চল্লিশ। (তাবারানী ফিল-কাবীর, হা/৭৪৯৫; এর সনদ দুর্বল হলেও ভিন্ন হাদিস দ্বারা এসব সমর্থিত) ।
.
হাদিসে আরো এসেছে “মাহদি আমার বংশধর। তিনি উজ্জ্বল ললাটের ও বাঁকা নাসিকা বিশিষ্ট হবেন। পৃথিবীকে ন্যায় নীতি ও ইনসাফ দ্বারা ভরপুর করে দেবেন। তিনি সাত বছর শাসন করবেন।” (সুনানে আবু দাউদ : হা/৪২৮৫; এর সনদ সহিহ) ।
.
♦যুগে যুগে মাহদি দাবিদার ভন্ডদের আস্ফালন :
.
বিভিন্ন হাদিসে ইমাম মাহদি (আঃ) এর অবির্ভাবের সুসংবাদ থাকায় একশ্রেণীর অসাধু লোক নিজেদের “মাহদি” দাবি করে বসে। এদের এ লংকাকান্ড প্রায় প্রত্যেক যুগেই দেখা গেছে। কখনো কখনো সাম্রাজ্যবাদী পেশিশক্তিরাও এ ভন্ডদের ভন্ডামির পেছনে মদদ যুগিয়ে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছিল। ভারত উপমহাদেশীয় কাদিয়ানী ফেতনা এমনি একটি লজ্জাজনক ইতিহাস, যা বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদী পেশিশক্তিকে বাদ দিয়ে কল্পনাও করা যায়না। সারা বিশ্ব আজ জেনে গেছে যে, মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (১৮৪০-১৯০৮ ইং) কাদের আশীর্বাদপুষ্ট এবং কাদের হাতে সৃষ্টি!
.
সেইকালের “কাদিয়ানী” আর আজ “আহমদিয়া মুসলিম জামাত”। শুধু শব্দের পরিবর্তন। মতবাদ আর উদ্দেশ্য আগের মতই। এটি মুসলিম জাতিকে বিভক্ত করার জন্য আরেক যন্ত্র। যার এক দিক দিয়ে ইনপুট হয়ে আরেক দিক দিয়ে আউটপুট হলেই বৃটিশ সরকারের নেক নজর আর লন্ডনে বড় বড় চাকুরী তার জন্য অভাব হয়না।

.
এ কাদিয়ানী জামাতের প্রতিষ্ঠাতা মির্যা সাহেব সর্বপ্রথম ১৯০১ সালে নিজেকে নিজে নবী বলে দাবি তোলে ও প্রকাশ্য ঘোষণা দেয়। কিন্তু ইতিপূর্বে সে নিজেকে “মাহদি” বলেই দাবি করেছিল। ১৯০৮ সালে ভারতীয় প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন ছানাউল্লাহ অমৃতস্বরী (রহ) এর সাথে “মুবাহালায়” লিপ্ত হবার সপ্তাহখানিক পরেই কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। মলমুত্রে নিমজ্জিত হয়ে তার চরম অপমানকর মৃত্যুর পরবর্তী ইতিহাস সবার জানা।
.
শীয়া মতাবলম্বী ইমামিয়া সম্প্রদায়ের মতানুসারে ২৫৪ হিজরীতে তাদের ১১ তম ইমামের ধারা শেষ হয়ে যায়। ১২ তম ধারার সাথে ইমাম মাহদি (আ)-কে সম্পর্কযুক্ত করতে চায়, যা পুরোপুরিভাবে অবান্তর ও অগ্রহণযোগ্য। আমরা তাদের এ কথিত ইমামিয়া ধারাকে ইসলাম বহির্ভূত ও মনগড়া মতবাদ মনে করি। কারণ তাদের বিশ্বাস, ইমাম মাহদি (আ) তিনি ২৫৫ হিজরীতে ১৫ ই শাবান মাসে (বর্তমানে ১৪৩৬ হিজরী) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শীয়াদের মতানুসারে তাঁর পিতার নাম ছিল “হাসান আছকরী”। পাঁচ বছর বয়সে তাদের কথিত সেই ১২ তম ইমাম আত্মগোপন করেন। তিনি অচিরেই কিয়ামত পূর্বমুহূর্ত আত্মপ্রকাশ করবেন—এ হল শীয়া ইমামিয়া সম্প্রদায়ের কল্পিতনির্ভর মতবাদ। আমরা তাদের এসব ভিত্তিহীন গল্পগুজব বিশ্বাস করিনা।
.
♦কে হবেন ইমাম মাহদি?
.
“মাহদি” শব্দের অর্থ পথপ্রদর্শক। কেয়ামত পূর্বমুহূর্ত তিনি মুসলিম জাতির প্রাণ রক্ষা ও সহায়তা করবেন বিধায় তাকে মাহদি উপাধি প্রদান করা হয়েছে।
.
যুগে যুগে যেসব স্বার্থান্বেষী মহল নিজে বা অন্যকে “মাহদি” বানিয়ে দাঁড় করিয়ে তামাশার পথ বেচে নিয়েছিল, তাঁরা ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। তাই জনস্বাধারণের অবগতির জন্য বেসিক দু’চারটে কথা না বললেই নয়। মনে রাখবেন, হযরত ইমাম মাহদি (আ) তিনি কোনো নবী নন, ফেরেশতাও নন। তাঁর নামের শেষাংশে দোয়াস্বরূপ “আলাইহিস সালাম” যোগ করা হয়। যেমন হযরত খিজির, বিবি মারিয়াম, বিবি আছিয়া প্রমুখ মহামানবদের নামের শেষাংশে করা হয়। তিনি কুরাইশ বংশে হযরত ফাতেমা’র আওলাদ হতে আসবেন। হাদিসে এসেছে “আল্লাহ তায়ালা আমার বংশ হতে এক ব্যক্তিকে প্রেরণ করবেন। আমার নামেই তাঁর নাম, তাঁর পিতার নাম আমার পিতার নামেই থাকবে।”

(সহিহ আল-জামে, হা/৫০৭৩, মুসনাদে আহমদ ৩/২৬-২৭, তিরমিযী, হা/২২৩২)।

.
ইমাম মাহদি (আঃ) তিনি বায়তুল্লাহ শরিফেই আত্মপ্রকাশ করবেন। দাজ্জাল আর হযরত মসীহে ঈসা এবং প্রতিশ্রুত ইমাম হযরত মাহদি সবার সময়কাল একই হবে। প্রতিশ্রুত ইমাম হযরত মাহদি’র জীবদ্দশাতেই বিশ্বে ইসলামী স্টেট প্রতিষ্ঠা হবে, তিনি ৭/৮/৯ বছর খেলাফত করবেন অতপর স্বাভাবিকভাবে ইন্তেকাল করবেন। যারা উপরুল্লিখিত আলোচনাদি স্মরণে রাখবেন তারা আমৃত্যু ভণ্ডদের ভন্ডামি আর প্রতারণায় কিছুতেই বিভ্রান্ত হবেননা।
.
♦ইমাম মাহদি (আঃ) এর আগমন সম্পর্কে বিশ্বনবীর ভবিষৎবাণী :
ইমাম মাহদি (আ) কেয়ামত পূর্বমুহূর্ত বায়তুল্লাহ শরিফে আশ্রয় নেবেন। দুশমন বাহিনী তাঁকে হত্যা করার জন্য বায়তুল্লাহ শরিফে আক্রমণ করতে চাইবে। বিস্তারিত এই
.
১-
সহিহ মুসলিম শরিফে (হা/২৮৮৪) এবং মুসনাদে আহমদ কিতাবে (হা/২৪৭৮২) এসেছে “আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, আমার উম্মতের একটি দল বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক কুরাইশীকে হত্যাকরার জন্য অগ্রসর হবে। দলটি মরুভূমিতে অবস্থানরত অবস্থায় ভূমিকম্পের সম্মুখীন হবে।” উল্লেখ্য, এখানে “কুরাইশী” বলে ইমাম মাহদি (আ)-ই উদ্দেশ্য।
.
২-
হাদিসে এসেছে “আসমান থেকে এক ব্যক্তির নামধরে ডাকা হবে। তাঁকে কোনো নিম্নশ্রেণীর মানুষ প্রত্যাখ্যান করবেনা, কোনো বিত্তশালী ও ক্ষমতাবান লোকেও অগ্রাহ্য করবেনা।”

(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/৩৭৭৫৫, হাদিসটি হাসান স্তরের হাদিস)।

৩-
হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত, সূর্যের মাঝে যখন একটি আশ্চর্যজনক চিহ্ন প্রকাশ পাবে, ইমাম মাহদি তখনি আত্মপ্রকাশ করবেন।

(মুসান্নাফে আব্দুর রাজ্জাক, হা/২০৭৭৫, ইমাম বুখারীর উস্তাদ ইমাম নাঈম ইবনে হাম্মাদ, হাদিস নং ৯৫১; হাদিসটির সনদ সহিহ) ।

এখানে ইমাম মাহদি (আঃ)-এর আত্মপ্রকাশ করার কথা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

৪-
হাদিসে এসেছে, রাসূলেপাক (সাঃ) বলেছেন “শেষ যামানায় এক ব্যক্তি খলিফা হয়ে আসবেন। তিনি মানুষের মাঝে সম্পদ বণ্টন করবেন।

(সহিহ মুসলিম, ফেতনা অধ্যায়, মুসনাদে আহমদ, ৩/৮০)।

৫-
হযরত আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূল (সাঃ) বলেছেন, আশ্চর্য হচ্ছি এ ভেবে যে, আমার উম্মতের মধ্য হতে একটি দল বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তিকে আক্রমণ করতে অগ্রসর হবে। যখন তারা মরুপ্রান্তর পাড়ি দেবে তখন তাদেরকে জমিনের ভেতর ধসিয়ে দেয়া হবে।”

(সহিহ বুখারি, ব্যবসা অধ্যায়, বাজার পরিচ্ছেদ এবং সহিহ মুসলিম, হা/২৮৮২ ফেতনা অধ্যায়, তিরমিযী হা/১২৭৬) ।

এখানে বায়তুল্লায় আশ্রয় নেয়া এক ব্যক্তি বলে ইমাম মাহদি (আঃ)-কেই বুঝানো উদ্দেশ্য। কারণ তিনি কুরাইশী এবং আল্লাহ তায়ালার খলিফা।
.
৬-
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : শেষ যামানায় আমাদের বংশ হতে তিন ব্যক্তি আগমন করবেন। ছাফফাহ, মানসূর এবং ইমাম মাহদি।

(বায়হাক্বী, দালায়েলুন নবুওয়াত ৬/৫১৪, তারিখে বাগদাদ ১/৬৩, তারিখে ইবনে কাসীর ৬/২৫১, হাকিম ৪/৫১৪)

৭-
হাদিসে এসেছে, রাসূলেপাক (সাঃ) বলেছেন : আমার উম্মতের মাঝে মাহদির আত্মপ্রকাশ হবে। তিনি সর্বনিম্ন সাত বছর আর সর্বোচ্চ নয় বছর শাসনকার্য পরিচালনা করবেন।

(সুনানে ইবনে মাজাহ, ইমাম মাহদি পরিচ্ছেদ, হা/৪০৮৩; হাদিসটির সনদ সহিহ) ।

৮-
বিশিষ্ট তাবেয়ী ও বুখারীর অন্যতম বর্ণনাকারী হযরত মুহাম্মদ ইবনে শিরীন (রহঃ) হতে বর্ণিত যে, “ইমাম মাহদি (আ) এ উম্মতের মধ্য থেকেই আসবেন। তিনি হযরত ঈসা (আঃ)-এর ইমামতি করবেন। “

(মুসান্নাফে ইবনে আবী শায়বাহ, হা/৩৮৮০৪)

৯-
বিশিষ্ট তাবেয়ী ও বুখারীর অন্যতম বর্ণনাকারী হযরত সাঈদ ইবনে মুছাইয়্যেব (রহঃ) বলেন, শেষ যামানায় মানুষ নানা দল-উপদলে বিভক্ত হবে। পরস্পরে মতবিরোধ ছড়িয়ে পড়বে। আসমানের দিগন্তে একটি ঝুলন্ত হাত প্রকাশ পাবে আর আসমান থেকে আহবান করবে যে, ওই ব্যক্তিই তোমাদের নেতৃত্বদানকারী মহান পুরুষ।”

(ইমাম বুখারীর উস্তাদ ইমাম নাঈম ইবনে হাম্মাদ, হাদিস নং ৯৭২; হাদিসটির সনদ সহিহ) ।

১০-
হাদিসে এসেছে “তোমাদের মধ্য হতে তিনটি দল ধনভাণ্ডার নিয়ে সংঘাতে লিপ্ত হবে। সবাই নিজেদের ইমাম মাহদি (আঃ)-এর অনুসারী হওয়ার দাবি করবে। এদের একটি দল টিকে থাকবে। … যখন তোমরা তাঁদের নেতাকে দেখতে পাবে তখন তাঁর হাতে বাইয়াত নেবে। যদিও শীতল বরফের উপর হামাগুড়ি দিয়ে যেতে হয়, তবুও। অবশ্যই এ ব্যক্তিই আল্লাহ তায়ালার খলিফা ইমাম মাহদি।”

(সুনানে ইবনে মাজাহ, হা/৪০৮৪; হাদিসটির সনদ সহিহ, তাযকিরাহ : ৫৭৫, ইমাম তাহের পাটনী)।

.
হাদিসে আরো এসেছে, রাসূলেপাক (সাঃ) বলেছেন “শেষ যামানায় এক ব্যক্তি খলিফা হয়ে আসবেন। তিনি মানুষের মাঝে সম্পদ বণ্টন করবেন।

(সহিহ মুসলিম, ফেতনা অধ্যায়, মুসনাদে আহমদ, ৩/৮০)।

আশাকরি ইমাম মাহদি (আঃ) এর আগমন নিয়ে ইসলামী জ্ঞানশূন্য একশ্রেণীর কথিত আধুনিক বন্ধুদের তাবৎ সন্দেহ ও সংশয় নিরসন হবে। যারা বুখারি এবং মুসলিম শরিফে ইমাম মাহদি (আঃ)-এর আলোচনা না থাকার দাবি তোলে থাকেন তাদের সেই অজ্ঞতাজনিত দাবিও এবার ফিরিয়ে নেবেন।

ইমাম মাহদি (আঃ)-এর আগমন বিষয়ে হাদিসগুলো তাওয়াতূর পর্যায়ে পৌঁছেছে :

যুগশ্রেষ্ঠ মুহাদ্দিস ও মুফাসসির সর্বজনখ্যাত আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী (রহঃ) ইমাম মাহদীর আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলন করে একটি আলাদা পুস্তিকাই লিখে গেছেন। যা তার الحاوي للفتاوي (হাভী লিল-ফাতাওয়া) গ্রন্থের ২য় খন্ডে রয়েছে। তাতে ২১৩-২৪৭ পৃষ্ঠা পর্যন্ত মোট ৩০ পৃষ্ঠাব্যাপী ইমাম মাহদী সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলিত হয়েছে। এরপর সুয়ূতী (রহ) লিখেছেন : আবুল হাসান মুহাম্মাদ ইবনে হুসাইন বলেন, “ইমাম মাহদীর আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির।”

হাফেয ইবনে হাজার (রহঃ) ফাতহুল বারীতে (৬/৫৬৯) লিখেছেন, “আবুল হাসান ‘মানাকিব আশ-শাফেয়ী’-তে লিখেছেন, ইমাম মাহদী নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত হবেন এবং ঈসা (আ) তার পিছনে নামায পড়বেন। তার আগমন সংক্রান্ত হাদীসসমূহ মুতাওয়াতির।”

সুতরাং ইমাম মাহদীকে অস্বীকার করার অর্থ, মুতাওয়াতির হাদীস দ্বারা প্রমাণিত অকাট্য বিষয়কে অস্বীকার করা। অতএব এ ধরনের চিন্তা ও বিশ্বাস থেকে বেঁচে থাকা জরুরি।

আরেকটি কথা হল, কোনো হাদিস সহিহ বা দুর্বল হওয়ার মানদণ্ড কিন্তু বুখারি মুসলিম বুঝায়না। যারা এ দুটিকে হাদিস সহিহ হবার মানদণ্ড বানিয়ে রাখেন তা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। কারো মনগড়া ব্যাপার নিয়ে আমি তর্কে জিততে চাইনা। কারণ, হাদিস সহিহ অথবা দুর্বল হয় সনদের বিশুদ্ধতার উপর ভিত্তি করে।

কোনো হাদিসের সনদ তথা বর্ণনা সূত্র যদি ক্রুটিযুক্ত হয়, তখন সেটি সহিহ বুখারি বা মুসলিম শরিফে স্থান নেবার পরেও যেমন সহিহ হিসেবে আখ্যায়িত হবেনা, তেমনি কোনো বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণিত হাদিস যদি অন্য কোনো হাদিস গ্রন্থে পাওয়া যায়, তখন সেটিকে দুর্বল বা অনিরাপদ বলা যাবেনা। এটাই ঊসূলে হাদিস।
.
আশা করি উক্ত লেখনির দ্বারা আপনাদের মুটামুটি একটা ধারনা দিতে পেরেছি যাই হোক আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে হক্ব বুঝার পর তা গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন, আমীন।

১৪৪৩০

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭