বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হিসাবেই দাড়িয়েছে। যেহেতু এটা ব্যাবহার করছি, অতএব বিভিন্ন লেখালেখিতে বিষয়বস্তকে প্রাণবন্ত ও হৃদয়গ্রাহী করতে লেখার সাথে ছবিরও ব্যাবহার হচ্ছে। বিশেষত আইডির নিরাপত্তা ও ইউজারের সঠিক আইডেন্টিফাইর জন্য প্রোফাইলে নিজ নিজ ছবির ব্যাবহার জরুরী বলে আইটি বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।এ বিষয়ে বিরূপ ফতোওয়ার মুখোমুখি হয়ে বিভিন্ন সময় অনেক ঘনিষ্ঠজন আমার সাথে আলোচনা করেন, সঠিক বিষয়টা জানতে চান। আমি এ বিষয়ে যতটুকু স্টাডি করেছি, তা থেকে অনুধাবন করতে পেরেছি যে,বর্তমান সময়ের ডিজিটাল ছবি নাজায়েজ বা হাদীসে বর্ণিত “হারাম তাসবিরের” আওতায় পরে না। অর্থাৎ এটা জায়েয।
অবশ্য কিছু উলামাদের ভিন্নমতও থাকতে পারে।
সে হিসাবে নিচের প্রামাণ্য লেখাটি ঘনিষ্ঠজনদের সাথে শেয়ার করলাম। এ বিষয়ে কারও ভিন্নমত থাকলে যৌক্তিক ও প্রামাণ্যভাবে ব্যাক্ত করতে পারেন।
গুরুত্বপূর্ণ লেখাটি হুবহু তুলেধরলাম।
………………………………
“মোবাইল, ইন্টারনেট ও টেলিভিশনের ছবি তথা ডিজিটাল ছবির আকার, পরিধি ও স্থিতি নাই ৷ যন্ত্র চালু না করলে ছবির কোন অস্তিত্ব দেখা যায় না ৷ তাই এটি কোন ক্রমেই তাসবির নয় ৷ ডিজিটাল ছবিকে জোর করে তাসবিরের হুকুমে ঢুকাতে চাওয়া এক প্রকার গোঁড়ামি ৷ আরব উলামায়ে কেরামের মতে ডিজিটাল ছবি- যার কোনো আকার, পরিধি ও স্থিতি নাই তা সম্পূর্ণ জায়েজ ৷
এ কথা সহজেই অনুমেয় যে, রাসূল [সা.] যে তাসবির-ছবি নিষেধ করেছেন তা নিশ্চয়ই ডিজিটাল ছবি ছিলো না ৷ বরং তা ছিল মূর্তি বা মূর্তির আকৃতি স্বরুপ ছবি ৷
রাসূল [সা.] বলেন,
ﻻ ﺗﺪﺧﻞ ﺍﻟﻤﻼﺋﻜﺔ ﺑﻴﺘﺎ ﻓﻴﻪ ﻛﻠﺐ ﻭ ﻻ ﺗﺼﺎﻭﺭ
ওই ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না যে ঘরে কুকুর থাকে কিংবা তাসবির-ছবি থাকে ৷ এছাড়াও সে সকল হাদিসে ছবির ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা এসেছে বলা হয়ে থাকে সেগুলোতেও তাসবির বা ﺻﻮﺭﺓ শব্দই ব্যবহৃত হয়েছে ৷ যেমন- ﻫﻠﻚ ﺍﻟﻤﺼﻮﺭﻭﻥ বা ﻣﻦ ﺻﻮﺭ ইত্যাদি ৷
আসুন জেনে নেই তাসবির কী? এ কথা মনে রাখতে হবে যে, তাসবির শব্দটি আরবি ব্যকরণ অনুযায়ী বাবে তাফয়িলের মাসদার বা ক্রিয়া ৷ আর বাবে তাফয়িলের বিশেষত্ব ( ﺧﺎﺻﺔ ) হল ﺟﻌﻞ ৷ এর অর্থ প্রদান করে। তাই ﺗﺼﻮﻳﺮ মানে ﺟﻌﻞ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ যার অর্থ দাঁড়ায় চিত্র-ছবি নির্মাণ করা ৷ আভিধানিক অর্থে ﻣﺎ ﻳﺠﻌﻞ ﻣﻦ ﺍﻟﻄﻴﻦ ﻭﺍﻟﺨﺸﺒﻪ অর্থ্যাৎ যা কাদামাটি ও কাঠ দ্বারা নির্মাণ করা হয় এবং যেটাকে মানুষ পূজা করে তাকেই তাসবির বা ছবি বলা হয়। কোনোভাবেই যেন শিরকের চিন্তাধারার উত্থান না ঘটে তাই তাসবির নিষেধ করা হয়েছে ৷ সর্বজন গ্রহণযোগ্য অভিধান লিসানুল আরবসহ অন্যান্য অভিধানে তাসবির বা ﺻﻮﺭﺓ ‘র সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে এভাবে-
ﻣﺎ ﻟﻬﺎ ﺷﻜﻞ ﻭ ﺍﺑﻌﺎﺩ ﻭ ﺛﺒﻮﺕ
অর্থ্যাৎ ছবি হলো যার আকার, পরিধি ও স্থিতি আছে ৷
মোবাইল, ইন্টারনেট ও টেলিভিশনের ছবি তথা ডিজিটাল ছবির আকার, পরিধি ও স্থিতি নাই ৷ যন্ত্র চালু না করলে ছবির কোন অস্তিত্ব দেখা যায় না ৷ তাই এটি কোন ক্রমেই তাসবির নয় ৷ ডিজিটাল ছবিকে জোর করে তাসবিরের হুকুমে ঢুকাতে চাওয়া এক প্রকার গোঁড়ামি ৷ আরব উলামায়ে কেরামের মতে ডিজিটাল ছবি- যার কোনো আকার, পরিধি ও স্থিতি নাই তা সম্পূর্ণ জায়েজ ৷ সৌদি আরবের সবচেয়ে বড় শায়খ ড. সালেহ আল-উসাইমিন এর ফতোয়া- ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺮﻗﻤﻲ ﺟﺎﺋﺰ অর্থ্যাৎ ডিজিটাল ছবি জায়েজ ৷ তাঁর এই ফতোয়া প্রদানের পর ডিজিটাল ছবি জায়েজ হওয়ার ব্যাপারে আরবের সকল উলামায়ে কেরাম একমত পোষণ করেছেন ৷ তবে প্রিন্টেড ছবির আকার, পরিধি ও স্থিতি রয়েছে ৷ তাই এটি তাসবিরের অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় নাজায়েজ ৷ তবে প্রিন্টেড ছবি জায়েজ হতে হলে জরুরতে দ্বীনিয়্যা শর্ত ৷
ﺍﻟﻀﺮﺭﻭﺭﺓ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ ﺃﻱ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ ﺍﻟﺪﻳﻨﻴﻪ
আলোচ্য এই মূলনীতির আলোকে দীনী প্রয়োজনেও প্রিন্টেড ছবিও জায়েজ বলে গণ্য হবে ৷
একটি ছবি এক হাজার শব্দের চেয়েও বেশি কার্যকরী ৷ কোনো বক্তব্যের প্রমাণ ও প্রভাব সৃষ্টির জন্য দ্বীনী প্রয়োজনে পত্রিকায় ছবি ছাপতে হয় ৷ এটিও জরুরতের অন্তর্ভূক্ত হবে ৷ এটি হবে ﺍﻟﻀﺮﺭﻭﺭﺓ ﺍﻻﻋﻼﻣﻴﻪ বা মিডিয়ার প্রয়োজন ৷ দ্বীন প্রচারে উলামায়ে কেরামের মিডিয়ায় আসা জরুরী ৷ বিশেষত টেলিভিশনে ৷ কারণ এটির মাধ্যমেই সবচে’ বেশি মানুষের কাছে পৌঁছা যায় এবং এটিই সবচে’ বেশি প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম ৷ এখনও এ নিয়ে ইখতেলাফ করতে থাকা উলামায়ে কেরামের জন্য আত্নঘাতী ছাড়া আর কিছু নয় ৷”
আল্লাহু আ'লা
৪৬৮
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
বর্তমান সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য......
স্টিফেন হকিং এবং মিচিও কাকু দু’জনই সমসাময়িক বিশ্ববিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী।......
হযরত ইমাম মাহদি (আঃ) এর পরিচিতি : ♦নাম ও বংশ......
মিডিয়া সহ সকল বিধর্মীদের একটা অভ্যাস হয়ে গেছে সমগ্র পৃথিবীর......
ইন্নালহামদা লিল্লাহ্............... নাস্তিকরা প্রতিনিয়ত বিজ্ঞান দিয়ে ধর্মকে বাদ দেওয়ার চেষ্টা......
একশ্রেণীর লোক যারা সবকিছু বোঝার জন্য বিজ্ঞানকে একমাত্র মাপকাঠি মেনে......