সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

অযোগ্য নও তুমি অাল্লাহর কাছে
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : সোমবার ০৪/১২/২০১৭

অযোগ্য  নও তুমি আল্লাহর কাছে

পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ উদার মানুষ ছিলেন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। তাঁর উদারতার সামনে সাগরের বিশালতাও হার মানতো।  আকাশের চেয়েও বিরাট এবং সাহারার চেয়েও প্রশস্ত ছিল তাঁর হৃদয়। আর সেই প্রশস্ত ও উদার হৃদয়ের শামিয়ানায় সবাই সমান গুরুত্ব পেতো। হোক সে সাধারণ কিংবা সমাজের চোখে তুচ্ছ কেউ। এমন লোকের প্রতিও সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতেন তিনি যার তেমন কোনো গুরুত্বই ছিল না সমাজে।
.
বনি আশযা‘ আরবের অন্যতম প্রসিদ্ধ গোত্র বনি গাতফানের একটি শাখা। প্রাচীন যুগ থেকে এ গোত্রটির বসবাস ছিল মদিনার শহরতলীতে। ওই গোত্রের এক বেদুইন যাহির ইবন হারাম রা. মদিনা থেকে কিছু দূরত্বে বসবাস করতেন। অত্যন্ত দরিদ্র ছিলেন তিনি। চেহারার দিক দিয়েও দেখতে খুব একটা সুন্দর ছিলেন না। তবে তার একটা গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য ছিল, তিনি রাসূলুল্লাহ সা. কে অত্যন্ত ভালোবাসতেন। আল্লাহর রাসূল সা.ও তাকে খুব মহব্বত করতেন।
.
যাহির ইবন হারাম আশযায়ি‘ রা. যখনই মদিনা আসতেন, রাসূলুল্লাহ সা. এর জন্য কিছু না কিছু গ্রাম্য উপঢৌকন নিয়ে আসতেন। যেমন: টাটকা সবজি, ফলমূল, যব, মধু ইত্যাদি। যাহির রা. যখন ফিরে যেতেন, আল্লাহর রাসূলও তাকে শহুরে হাদিয়া-তোহফা দিয়ে বিদায় জানাতেন। 
.
একদিন তো আল্লাহর রাসূল সা. যাহির রা. কে এমন সম্মান দিলেন, যা অন্য কোনো সাহাবির ভাগ্যে জোটে নি। তিনি সা. বললেন, ‘যাহির আমার গ্রাম্য বন্ধু আর আমি তার শহুরে বন্ধু।’ 
আহা! কী মহানুভবতা! কী মায়াভরা উক্তি!
আসুন, হাদিসে বর্ণিত শব্দগুলোর উপর একটু চিন্তা করি:
(إن لكل حاضرة بادية وبادية آل محمد زاهر بن حرام)
“নিশ্চয়ই প্রত্যেক শহুরে পরিবারের একজন গ্রাম্য বন্ধু থাকে আর মুহাম্মদের পরিবারের গ্রাম্য বন্ধু হচ্ছে যাহির ইবন হারাম।” 
.
যাহির রা. ছিলেন সহজ, সরল।  সাদাসিধে মানুষ। শহুরে চালচলন সম্পর্কে ছিলেন বেখবর। নিজ গ্রাম থেকে যখন আসতেন, সঙ্গে আনা পণ্যসামগ্রী নিয়ে বাজারের মধ্যেই কোনো এক জায়গায় দাঁড়িয়ে যেতেন এবং বিক্রি আরম্ভ করে দিতেন। প্রাচীনকাল থেকে প্রথা চলে আসছিল, যখনই গ্রাম থেকে কোনো ব্যক্তি সবজি, ফলমূল ইত্যাদি নিয়ে আসত লোকজন দৌড়ে এসে তার চতুর্দিকে জড়ো হয়ে যেত। এভাবে তারা তাজা টাটকা সবজি পেয়ে যেত যা প্রায়শই সস্তা হতো। 
.
একদা একই কায়দায় যাহির রা. সঙ্গে আনা গ্রাম্য কিছু পণ্যসামগ্রীসহ বাজারে এলেন এবং এক জায়গায় দাঁড়িয়ে তা বিক্রি করতে লাগলেন। তার ভাগ্য ভালোই ছিল, আল্লাহর রাসূল সা.ও বাজারে আসেন তখন। এসে রাসূলুল্লাহ সা. যখন তাঁর গ্রাম্য বন্ধুকে দেখলেন, পিছনের দিক দিয়ে গিয়ে তার চোখের উপর তাঁর পবিত্র হাত রাখলেন।
.
সুপ্রিয় পাঠক! সামনে যাবার আগে একটু চিন্তা করুন তো, রাসূলুল্লাহ সা.এর চরিত্র কত উন্নত ও মহৎ ছিল! যাহির অতি সাধারণ একজন মানুষ। কিন্তু তার অত্যন্ত ভালো গুণ হচ্ছে, আল্লাহর রাসূল সা. তাকে ভালোবাসেন আর তিনিও আল্লাহর রাসূল সা.কে মহব্বত করেন। 
.
রাসূলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেন:
(ابغوني في ضعفاءكم) 
“আমাকে তোমরা দুর্বলদের মধ্যে তালাশ করো।” 
তিনি আরো বলেন:   (فإنما ترزقون وتنصرون بضعفائكم) “তোমাদেরকে রিযিক ও বিজয় দান করা হয় সেই দুর্বলদের কারণেই।”
.
একটু কল্পনা করুন তো, বন্ধুরা! যাহিরের চোখের উপর রাসূলুল্লাহ সা.এর রেশমের চেয়েও নরম ও তুলতুলে এবং কস্তুরি ও গোলাপের চাইতেও বেশি সুগন্ধিময় হাত। প্রথম প্রথম তো যাহির ভড়কে গেছেন। ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে তিনি বলতে লাগলেন, কে ভাই? আমার চোখের উপর কে হাত রাখল? 
.
কিন্তু যখন তিনি রাসূলুল্লাহ সা.এর মোবারক হাতের ছোঁয়া অনুভব করলেন, তাঁর সুরভির ঘ্রাণ নিলেন.. তখন তিনি বুঝতে পারলেন, তার পিছনে জগতের ইমাম দাঁড়িয়ে। এ সুযোগকে তিনি গনিমত মনে করলেন এবং পিঠ দিয়ে রাসূলুল্লাহ সা.এর সিনার সাথে ঘষা আরম্ভ করে দিলেন।
.
আল্লাহর রাসূল সা. মহব্বতপূর্ণ ভঙ্গিতে বললেন, "হে লোকজন! কেউ কি আছো, যে এই গোলামকে কিনে নিবে?”
যাহিরও সকরুণ ভঙ্গিমায় আরজ করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমার মত কালো কৃঞ্চ গ্রাম্য লোককে কিনে নিয়ে কেউ করবে টা কী? আমাকে কিনে বড় লোকসান হবে তার। কোনো মান বা মূল্যই তো নেই আমার। আমি তো বেকার, অপদার্থ মানুষ। 
.
রাসূলুল্লাহ সা. জবাবে বললেন: “আরে প্রিয়! এমনটি বলো না। কেউ কি তোমাকে বলেছে, তোমার কোনো মান নেই, মূল্য নেই? তুমি আল্লাহর নিকট অপদার্থ নও।  তুমি তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাস।  এ জন্যে তুমি আল্লাহর নিকট বড়ই মূল্যবান।”

৩৯১

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭