একমাত্র বাংলার মাটি লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের ৬নং সেক্টর হেডকোয়ার্টার। যাহাতে মিশে আছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা।এখান থেকে তৎকালীন ৬নং সেক্টর হেডকোয়ার্টারের কমান্ডার এয়ার ভাইস মার্শাল এম খাদেমুল বাশার এর অধীনে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়। মুক্ত অঞ্চল বাউরা থেকে বুড়িমারী পর্যন্ত রেল লাইন এলাকার সংগ্রামী জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধারা তুলে ফেলা ও বাউরার মুক্তিযোদ্ধাদের শক্ত ডিফেন্স করে অবস্থান নেওয়ার কারণে পাক-হানাদার বাহিনী পাটগ্রাম বুড়িমরী অঞ্চলে প্রবেশ করতে পারে নি । ফলে যুদ্ধ শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ৬ নং সেক্টর হেডকোয়ার্টার বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মুক্তাঞ্চল হিসাবে ছিল । ১৯৭১ সালে ৬ নং সেক্টর সমগ্র রংপুর জেলা এবং দিনাজপুর জেলার ঠাকুরগাঁও মহকুমা নিয়ে গঠিত হয় । প্রধানত রংপুর ও দিনাজপুরের ইপি আর বাহিনী বিমান বাহিনী সেনা বাহিনী ছাত্র জনতা ও মুক্তিযোদ্ধা নিয়ে ৬ নং সেক্টর গঠিত । সেক্টর কমান্ডার উইং কমান্ডার এম খাদেমুল বাশার লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার অর্ন্তগত বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে অবস্থিত ৬ নং সেক্টর হেডকোয়ার্টারটি পরিচালনা করেন । প্রথম দিকে নিয়মিত ও অনিয়মিত সহ প্রায় ০২ (দুই) হাজার জন সৈন্য ছিল । যার মধ্যে মুক্তি বাহিনী ছাত্র নেতা পুলিশ, আনসার, ই পি আর, সেনাবাহিনী ও অন্যান্য বাহিনী অর্ন্তভুক্ত ছিল । যুদ্ধের শেষ পর্যন্ত এখানে প্রায় ১৯ (উনিশ) হাজার মুক্তিযোদ্ধা ছিল। এই সেক্টারে ৫ টি সাব-সেক্টার ছিল, সাব সেক্টর গুলো হলো ১. ভোজনপুর সাব-সেক্টর, কমান্ডার নজরুল এবং পরে স্কোয়াডার লিডার সদর উদ্দিন ও ক্যাপ্টেন শাহরিয়ার ২. পাটগ্রাম ও বড়খাতা সাব-সেক্টরে প্রথমে কয়েকজন ইপিআর এর জুনিয়র কমিমন অফিসার সুবেদার বোরহান উদ্দিন এর নেতৃত্বে কমান্ড পরিচালিত হয়। পরে ক্যাপ্টেন মতিউর রহমান সাব-সেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন ৩. সাহেবগঞ্জ সাব- সেক্টরে ক্যাপ্টেন নওয়াজেশ উদ্দিন দায়িত্ব পালন করেন ৪. মোঘলহাট সাব-সেক্টারে ক্যাপ্টন দেলোয়ার দায়িত্ব পালন করেন ও ৫. চিলাহাটি -ফ্লাইট ল্যাফটানেন্ট ইকবাল দায়িত্ব পালন করেন। এই ৬ নং সেক্টরের বাহিনী পাটগ্রাম উপজেলাকে ৯ মাস শত্রু মুক্ত রাখেন । এবং ৯ মাস যুদ্ধ করে শত্রুদের পরাজিত করেন । জনাব আবেদ আলী এমপি প্রধান সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন । জনাব মতিউর রহমান জোনাল চেয়াম্যান এবং জোনাল সেক্রেটারী হিসাব্ েভারতের কুচবিহারে দায়িত্ব পালন করেন, জনাব সিদ্দিক হোসেন এম পি এ দহগ্রাম ও আঙ্গরপোতায় মুক্তিযুদ্ধের ট্রেনিং এর জন্য একটি ক্যাম্প পরিচালনা করেন । বর্তমান বুড়িমারী ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম (সাবেক দারোগা পুলিশ) বলেন আমি যুদ্ধের সময় লালমনিরহাট ডিগ্রী কলেজের ছাত্র ছিলাম।এই সময় সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী শেখ মুজিবের ভাষনে অনুপ্রাণিত হয়ে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য জনাব আবেদ আলী এমপি প্রধান সমন্বয়কারীর সাথে ভারতে চ্যাংড়াবান্দায় দেখা করি।তিনি আমাকে .দল গঠন করে নিয়ে যেতে বলে। এরপর আমি ২০-৩০ জন সহকর্মি নিয়ে যাই এবং ভারতের মুজিবনগরে ট্রেনিং করি। ট্রেনিং শেষে ৬নং সেক্টরের ৬নং কোম্পানি কমান্ডার হিসাবে যুদ্ধে অংশগ্রহন করি।১৯৭২ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করি। আমরা এই বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চবিদ্যাল তথা ৬নং সেক্টর হেডকোয়ার্টারের আওতায় যুদ্ধ করেছি বিনিময়ে অনেক কিছু পেয়েছি। কিন্তু বিদ্যালয়টি কি পেল? জাতীয় স্বার্থে বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়কে জাতীয়করন করে বিদ্যালয়ের শিক্ষক সংকোট সহ অন্যান্য সমস্যার সমাধান করা উচিত বলে আমি মনে করি। ৮ নং বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান ,বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরাম যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক- জনাব, আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত রহমান বলেন- আমি মুক্তিযুদ্ধ দেখি নি। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের ভয়ংকর কাহিনীর গল্প শুনেছি, কতই যন্ত্রনা কত নির্যাতন সয়ে দীর্ঘ ৯ টি মাস কাটিয়েছে নিরহ বাঙ্গালীরা,যতদিন বাংলাদেশ থাকবে,লাল সবুজের পতাকায় চির স্মরনীয় হয়ে থাকবে বুড়িমারী হাসরউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়টি। যুদ্ধ চলাকালীন সময় ১১ টি সেক্টরের ১০ টি ছিল।ভারতের মাটিতে শুধু মাত্র ১ টি সেক্টর বাললাদেশে,আর সেটাই হল বুড়িমারী হাসরউদ্দীন উচ্চ বিদ্যালয়।। অথচ স্মৃতি বিজারিত এই স্কুলটি আজও ৭১ এর থেকে ১৭ একই অবস্থা।।। দুঃখের সাথে আর হতাশায় আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের অবদান, লাল সবুজের পতাকার সম্মানাতে আমাদের এই স্কুলটি জাতীয়করন করা দরকার বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক জয়নাল আবেদিন বলেন- আমি দীর্ঘদিন যাবৎ এই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসাবে শিক্ষকতা করেছি। স্কুলটিতে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজরিত কমান্ডার এম খাদেমুল বাশারারের চেয়ার, টেবিল ছিল। তাও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের লোক এসে নিয়ে গেছে। আমাদের ছেলেমেয়েরা এটা দেখার জন্য কি এখন ঢাকায় যাবে? আমার মনে হয় এটাকে ফেরত নিয়ে এসে এখানকার স্মৃতি সৌধে রাখা উচিত। বর্তমান প্রধান শিক্ষক মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন- আমি এই মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি জড়িত ৬নং সেক্টর হেডকোয়ার্টার হিসাবে খ্যাত বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে এইখানে প্রধান শিক্ষক হিসাবে চাকুরী করছি।এর চেয়ে গর্বের আর কি হতে পারে। সরকারের কাছে আমাদের সকলের দাবি বিদ্যালয়টিকে জাতীয়করন করা হোক।https://web.facebook.com/shahinur.burimari/posts/1968735770027636 অনেকেরই অজানা- একমাত্র বাংলার মাটি লালমনিরহাট জেলার বুড়িমারীতে বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় মুক্তিযুদ্ধের ৬নং সেক্টর হেডকোয়াডার
২৫২
১
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
একমাত্র বাংলার মাটি লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে বুড়িমারী হাসর......