সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

রোজার জরুরি কিছু মাসলা-মাসায়েল
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ১৫/০৬/২০১৭

রোজা ফারসি শব্দ৷ এর অর্থ হচ্ছে দিন৷ যেহেতু এই আমলটি দিনের শুরু থেকে শেষাংশ পর্যন্ত পালন করা হয়, তাই একে রোজা বলা হয়৷

আর আরবিতে এর নাম সাওম; যার শাব্দিক অর্থ কোনো কাজ থেকে বিরত থাকা৷ শরিয়তের পরিভাষায় সুবেহ সাদিকের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যস্ত আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশে পানাহার ও স্ত্রী সহবাস থেকে বিরত থাকাকে সাওম বা রোজা বলা হয়৷ দ্বিতীয় হিজরির শাবান মাসে আরবি বর্ষপঞ্জিকার নবম মাস রমজানে মুসলমানদের জন্য রোজা ফরজ হয়৷ আল্লাহর নবী (সা.) ওই সালের রমজান থেকে মোট ৯ বার রমজানের রোজা পালন করেন৷
ইসলামের রোকনগুলোর মধ্যে রমজান মাসের রোজার স্থান হলো তৃতীয়, যা প্রত্যেক সুস্থ মস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের ওপর ফরজ৷ এর অস্বীকারকারী কাফের এবং বিনা কারণে পরিত্যাগকারী ফাসেক৷

রোজার নিয়ত
রমজান মাসে রোজার নিয়ত বা অন্তরে ইচ্ছা বা আগ্রহকে দৃঢ় করে নেওয়া জরুরি৷ মুখে উচ্চারণ করে নিয়ত করা জরুরি নয়৷ যদি কেউ মুখে বা মনে মনে রোজার নিয়ত না করে বা রোজার রাখার জন্য মনস্থির না করে পুরো দিন পানাহার থেকে বিরত থাকে তবে তা রোজা বলে গণ্য হবে না৷

আরবি ভাষায় রোজার নিয়ত: নাওয়াইতু আন আছুমা গাদাম মিন শাহরি রামাদানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা ইয়া আল্লাহু ফাতাক্কাব্বাল মিনি্ন ইন্নাকা আনতাস সামীউল আলীম৷ এর বাংলা অর্থ: (হে আল্লাহ) আপনার সন্তুষ্টির জন্য আগামীকাল রমজানের ফরজ রোজা রাখার নিয়ত করছি৷ আমার তরফ থেকে আপনি তা কবুল করুন৷ নিশ্চয়ই আপনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞাত৷

অথবা, নাওয়াইতু আন আছুমা লিল্লাহি তাআলা…এটুকু বললেও হবে৷ আবার বাংলায় ‘আমি আল্লাহর জন্য রোজা রাখার নিয়ত করছি’ বললেও কোনো ক্ষতি নেই৷

আরবি ভাষায় ইফতারের দোয়া: আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলাইকা তাওয়াক্কালতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু বিরাহমাতিকা ইয়া আরহামার রাহিমীন৷ এর বাংলা অর্থ: (হে আল্লাহ) আমি তোমারই সন্তুষ্টির জন্য ও তোমারই ওপর ভরসা করে রোজা রেখেছিলাম এবং হে রাহমানির রাহিম তোমারই অনুগ্রহ দ্বারা ইফতার করছি৷

যেসব কারণে রোজা নষ্ট হয়

১. নাক বা কানে ওষুধ প্রবেশ করালে৷
২. ইচ্ছাকৃতভাবে মুখ ভরে বমি করলে৷
৩. কুলি করার সময় গলার মধ্যে পানি চলে গেলে৷
৪. নারী স্পর্শ বা এ-সংক্রান্ত কোনো কারণে বীয বের হলে৷
৫. খাদ্য বা খাদ্য হিসেবে গণ্য নয়, এমন কোনো বস্তু গিলে ফেললে৷
৬. আগরবাতির ধোঁয়া ইচ্ছা করে গলা বা নাকের মধ্যে প্রবেশ করালে৷
৭. বিড়ি-সিগারেট পান করলে৷
৮. ভুলে খেয়ে ফেলার পর ইচ্ছা করে পুনরায় খাবার খেলে৷
৯. সুবেহ সাদিকের পর খাবার খেলে৷
১০. বুঝে হোক বা না বুঝে, সূর্য ডোবার আগে ইফতার করলে৷
১১. ইচ্ছা করে স্ত্রী সহবাস করলে৷

যেসব কারণে রোজা মাকরুহ হয়

১. বিনা কারণে জিনিস চিবিয়ে বা লবণ কিংবা কোনো বস্তুর স্বাদ গ্রহণ করা৷ যেমন: টুথপেস্ট, মাজন, কয়লা ইত্যাদি দিয়ে দাঁত মাজা৷
২. গোসল ফরজ অবস্থায় সারা দিন গোসল না করে থাকা৷
৩. শরীরের কোথাও শিঙা ব্যবহার করা বা রক্ত দান করা৷
৪. পরনিন্দা করা৷
৫. ঝগড়া করা৷
৬. রোজাদার নারী ঠোঁটে রঙিন কোনো বস্তু লাগালে, যা মুখের ভেতর চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে৷
৭. রোজা অবস্থায় দাঁত ওঠানো বা দাঁতে ওষুধ ব্যবহার করা, তবে একান্ত প্রয়োজনে তা জায়েজ৷

যেসব কারণে রোজা ভঙ্গ হয় না কিংবা মাকরুহও হয় না

১. মিসওয়াক করলে৷
২. মাথায় বা শরীরে তেল লাগালে৷
৩. চোখে ওষুধ বা সুরমা লাগালে৷
৪. গরমের কারণে পিপাসায় গোসল করলে৷
৫. সুগন্ধি ব্যবহার করলে৷
৬. ইনজেকশন বা টিকা দিলে৷
৭. ভুলক্রমে পানাহার করলে৷
৮. ইচ্ছা ছাড়াই ধুলাবালি বা মাছি ইত্যাদি প্রবেশ করলে৷
৯. কানে পানি প্রবেশ করলে৷
১০. দাঁতের গোড়া থেকে রক্ত বের হলে৷

যেসব কারণে রোজা না রাখলেও ক্ষতি নেই

১. কোনো অসুখের কারণে রোজা রাখার শক্তি হারিয়ে ফেললে অথবা অসুখ বৃদ্ধির ভয় হলে৷ তবে পরে তা কাজা করতে হবে৷
২. গর্ভবতী স্ত্রীলোকের সন্তান বা নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কা হলে রোজা ভঙ্গ করা বৈধ, তবে কাজা করতে হবে৷
৩. যেসব স্ত্রীলোক নিজের বা অপরের সন্তানকে দুধ পান করান, রোজা রাখার ফলে যদি দুধ না আসে, তবে রোজা না রাখার অনুমতি আছে; কিন্তু পরে কাজা আদায় করতে হবে৷
৪. শরিয়তসম্মত মুসাফির অবস্থায় রোজা না রাখার অনুমতি আছে৷ তবে রাখাই উত্তম৷
৫. কেউ হত্যার হুমকি দিলে রোজা ভঙ্গের অনুমতি আছে৷ পরে এর কাজা করতে হবে৷
৬. কোনো রোগীর ক্ষুধা বা পিপাসা এমন পর্যায়ে চলে গেল এবং কোনো দ্বীনদার মুসলিম চিকিত্‍সকের মতে রোজা ভঙ্গ না করলে তখন মৃতু্যর আশঙ্কা আছে৷ তবে রোজা ভঙ্গ করা ওয়াজিব৷ পরে তা কাজা করতে হবে৷
৭. হায়েজ-নেফাসগ্রস্ত (বিশেষ সময়ে) নারীদের জন্য রোজা রাখা জায়েজ নয়৷ পরবর্তী সময়ে কাজা করতে হবে৷

৪৩৩

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭