ফরয নামাযের পর দোয়া করা সুন্নাত নির্ভর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কল্যাণকর আমল। অজ্ঞ এবং অলস ব্যক্তি ছাড়া এ আমল আস্বীকার করার অবকাশ নাই। কারণ এ ব্যপারে কোরআন সুন্নাহর মধ্যে অনেক দলিল আদিল্লা বিদ্যমান ।
কোরআনের আলোকে দোয়াঃ--
পবিত্র কালামে পাকে আছে " ফা ইজা ফারাগতা ফানসাব'"। অর্থাৎ - যখন ফরয নামাজ থেকে বের হও,অবসর গ্রহন কর তখন রবের প্রতি মনোনিবেশ কর । এ মনোনিবেশ কিভাবে করতে হবে তার স্পষ্ট বর্ণনা বিশ্ববিখ্যাত তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ রয়েছে।
আল্লামা জালাল উদ্দীন মহল্লী তাফসীরে জালালাইনে, আল্লামা আহমদ সাভী তাফসীরে সাভী শরিফে উল্লেখ করেন - " ফাইজা ফারাগতা মিনাস সালাতে ' ফানসাব ' ইত'আব ফিদ দোয়ায়ে "। অর্থাৎ যখন নামায থেকে ফারিগ হও তখন দোয়ার প্রতি মনোনিবেশ কর । রইসুল মুফাসসিরীন হযরত আব্দুল্লা ইবনে আব্বাস (রাঃ) এর অভিমত হল-- " যখন ফরজ নামায থেকে অবসর নিবে, তখন দোয়ার দ্বারা রবের প্রতি মনোনিবেশ কর"।( তাফসীরে রুহুল মা'নী ৩০ম খন্ড --৪৯৬ পৃঃ , তাফসীরে খাজিন ৪ র্থ খন্ড ৪৪৩ পৃঃ, তাফসীরে তাবারী শরীফ ৩০তম খন্ড ২৫৬ পৃঃ, তাফসীরে নাসাফী ৪ র্থ জিলদ ৪৪৭ পৃঃ, তাফসীরে ইবনে কাছির ৪ র্থ জিলদ ৬৪৪ পৃঃ) আরো অনেক উদ্ধৃতি রয়েছে তাফসীর সমুহে।
এবার আসুন হাদীছে নববী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আলোকে কি প্রমান হয়ঃঃ-- " হযরত আবু উমামা বাহলী( রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসূলে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করা হল যে, কোন দোয়া তাড়াতাড়ি কবুল করা হয় ? নবিজী বললেন নিশির শেষ ভাগে এবং প্রত্যেক ফরয নামাজের পরে দোয়া তাড়াতাড়ি ক্ববুল হয়" ।( তিরমিযি- হাঃ নং--৩৪৯৯, সুনানে কুবরা-৯৮৫৬, মিশকাত-৮৯ পৃঃ, শরহে মিশকাত ৩ য় খন্ড ৪৩ পৃঃ, আত্তারগীব ওয়াত তারহিব হা নং-২৫৫০, ইবনে তাইমিয়া ফাতওয়ায়ে কুবরা ২ য় খন্ড ১৪৩ পৃঃ সহ অনেক হাদীছের কিতাবে সহিহ বলে হাদীছ খানা উল্লেখ রয়েছে।)
এ ছাড়াও মুসনাদে আহমদের ২২১১৯ নং হাদীছে নবিজী ফরয নামাজের পর দোয়া কি বলে করতে হবে তা শিক্ষা দিয়েছেন। ইমাম বোখারী আদাবুল মুফরাদে ৬৯০ নম্বরে আবু দাউদ ১৫২২ নম্বর হাদীছ হিসেবে ,নাসায়ী তে ১৩০৩ নং হাদীছ হিসেবে উক্ত হাদীছ উল্লেখ করেছেন ।মুসতাদরাকে হাকিমে, মুজামুল কবীরে, ইবনে হিব্বানে, সহিহ ইবনে খুজাইমা সহ বিস্তর হাদীছের কিতাবে ফরয নামায শেষে দোয়া ও দোয়ার পদ্ধতি শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এরপর ও যারা ফরয নামজের শেষে দোয়া কে বেদা'ত বলতে চান তাদের কে হাদীছের কিতাব পড়ার জন্য বলব। নতুবা পড়নে ওয়ালাদের কাছে জেনে নেয়ার অনুরোধ করা ছাড়া আর কি ই বাবলার আছে?
হাত উঠিয়ে না গুটিয়ে দোয়া করবঃ
"হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন -- আল্লাহর রাসূল দুই হাত উঠিয়ে দোয়া করতেন"( সহিহ বুখারী,সহিহ মুসলিম হাদীছ নং -৮৯৫, মুসনাদে আহমদ --১৩১৮৭, মুসনাদে আবি ইয়ালা --৩৫০২ নং হাদীছ সহ অসংখ্য সহিহ হাদীছের কিতাবে উক্ত হাদীছের উল্লেখ রয়েছে।)
ইমাম হাইছামীর মজমুয়ায়ে জাওয়ায়ীদের হাদীছ নং ১৭৩৩৬ এ আছে -" নিশ্চয় আল্লাহর নবী দোয়ার সময় দু হাত উঁচু করতের। এটা চলমান অতীত মানে নবিজীর আমলই এরূপ ছিল। আবু দাউদ শরীফের ১৪৮৬ নং হাদীছে আছে " আল্লাহর নবী বলেছেন যখন তোমরা আল্লাহর কাছে চাও তখন হাতের তালু পেট দ্বারা প্রার্থনা করো। নাসির উদ্দিন আলবানীও হাদীছ খানাকে সহীহ বলেছে। ( সিলসিলাহে সহিহাহ / ৫৯৫)
সুতরাং এ ব্যাপারে অজস্র হাদীছের বর্ণনা থাকার পর ও যারা নামাযের পর দোয়া ছাড়া চলে যান বা সুন্নাত নামাযে দাঁড়িয়ে যান নিঃসন্দেহে তাদের আমল খেলাফে সুন্নাত ও হঠকারিতা বৈ কিছু নয়। হেদায়াতের মালিক আল্লাহ। তারই জন্য সকল প্রশংসা।
১৪৮৪
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
শিরক শব্দের অর্থ- শরিক করা বা অংশীদারিত্ব স্থাপন করা। শাব্দিক......
নৈতিক অবক্ষয়ের চরম একটি গর্হিত কাজের নাম ঘুষ। ইসলাম ঘুষকে......
কোমলতা প্রদর্শনের গুরুত্ব : ইসলামে বিনয় ও কোমলতার গুরুত্ব অপরিসীম।......
আমরা সামাজিক যোগাযোগের ক্ষেত্রে কথা বলাকে প্রধান মাধ্যম হিসেবে বেছে......
ইসলামের মধ্যে নামাজের জন্য প্রতি ওয়াক্তে আযান দেয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ......
আল্লাহ পাক তার হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়য়াসাল্লামকে কিভাবে নিজের সাথে......
প্রসঙ্গ: - "কুরবানীর বিধান " কুরবানী একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এটি......
পবিত্র ক্বোরআন সরাসরি আল্লাহর কালাম।আল্লাহর কালাম তিলাওয়াত করা মানেই আল্লাহর......
আল্লাহ পাকের ঘোষণা " লা তাত্তাবিউ খুত্বুয়াত্বিস শাইত্বান। " অর্থাৎ......
যাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের অন্যতম। মাহবুবে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফরমান-"......