পিপীলিকার প্রজ্ঞাপাঠ
وهم لا يشعرون
আমাদের স্বভাব, যেখানে একজন আরেকজন সম্পর্কে সুধারণার সুযোগ রয়েছে সেখানেও আমরা কুধারণা পোষণ করি। এক ভাই আরেক ভাই সম্পর্কে, এক মহিলা আরেক মহিলা সম্পর্কে বাজে ও অশুভ ধারণা পোষণ করি। অথচ এটা যে এক মারাত্মক ব্যাধি ও মনোবিকার, আমরা জানিও না। এর দ্বারা কত ঘর উজাড় হয়েছে ! কত সংসার নষ্ট হয়েছে! হচ্ছেও প্রতিনিয়ত।
.
সুলায়মান আলাইহিওয়াসাললাম যখন তাঁর বিশাল বাহিনী সমেত পিঁপড়াদের উপত্যকা অতিক্রম করছিলেন, তখন এক পিঁপড়া তার স্বজাতিকে ডাক দিয়ে বলল, হে পিঁপড়ার দল! তোমরা সবাই নিজ নিজ ঘরে ঢুকে পড়। সুলায়মান ও তাঁর বাহিনী না বুঝে তোমাদেরকে পদপিষ্ট করে দিবেন।
.
পবিত্র কুরআনে এ প্রসঙ্গে وهم لا يشعرون শব্দ বর্ণিত হয়েছে। অর্থাৎ তারা বেখেয়ালে..অজান্তে.. না বুঝে তোমাদের পিষে ফেলতে পারেন। এখানেই আহ্বানকারী পিপঁড়ার প্রজ্ঞানিহিত। মানে, তারা যদি পদপিষ্টও করে, তাও না বুঝে.. বেখেয়ালে। ইচ্ছা করে এমন ভয়াবহ কাজ কখনো তারা করবে না।
.
এ ছিল সুলায়মান আ. ও তাঁর বাহিনীর প্রতি সেই পিপীলিকার সুধারণা। জালিম ও অবিবেচক আখ্যা দেয়ারও সুযোগ ছিল। কিন্তু সে তা করেনি। অথচ আমরা মানুষ হয়ে একজন আরেকজন সম্পর্কে কুধারণা পোষণ করি। আল্লাহকে অসন্তুষ্ট করি।
.
কারও সম্পর্কে কুধারণা পোষণ করা কত মারাত্মক ও বড় অপরাধ, তার প্রমাণ দিতে গিয়ে প্রসিদ্ধ তাবেয়ি মাকহুল ইবনু আবদুল্লাহ রহ. বলেন, একবার আমি মসজিদে বসা ছিলাম। এমন সময় একব্যক্তি নামায পড়ছিল আমার পাশে। লক্ষ করলাম, সিজদায় গিয়ে লোকটি অঝোরধারায় কাঁদছে। মনে মনে বললাম, লোকটি বোধ হয় মানুষকে দেখানোর জন্য এমন করে কাঁদছে। আমার এ মন্দ ধারণা আল্লাহর পছন্দ হয়নি। তারপর দীর্ঘ এক বছর কান্নার নেয়ামত থেকে আমি বঞ্চিত ছিলাম।
.
আবু হুরায়রা রা. বলেন, ফিজা গোত্রের জনৈক লোক আল্লাহর রাসূল সাললাল্লাহু আলাইহিওয়াসাললাম এর দরবারে এসে বলল,
-আমার স্ত্রী একটি কালো সন্তান জন্ম দিয়েছে। অর্থাৎ সে তা দ্বারা বোঝাতে চাচ্ছে, সন্তানটি মনে হয় আমার নয়; অন্য কারো।
এখানে ওই মহিলার ইজ্জতের প্রতি আঘাত হানার বিরাট এক সুযোগ ছিল। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাললাল্লাহু আলাইহিওয়াসাললাম এর শিক্ষা দেখুন! তিনি লোকটির মন্দ ধারণাকে নাকচ করে দিয়ে বললেন,
-আচ্ছা“! তোমার ঘরে উট আছে?
লোকটি জবাব দিল,
-আছে।
তাকে প্রশ্ন করলেন,
-উটের বাচ্চাগুলোর মধ্যে কি কালো বর্ণের কোনো বাচ্চা আছে?
লোকটি বলল,
-আছে।
.
তখন আল্লাহর রাসূল সা. তাকে জিজ্ঞাসা করলেন,
-সবগুলো বাচ্চা লাল বর্ণের। হঠাৎ একটা কালো বর্ণের কেন?
জবাব দিল,
-হয়ত তার বাপ-দাদার বংশগত কোনো কারণে এমনটি হয়েছে।
তখন রাসূলুল্লাহও বললেন,
-তোমার বাচ্চার ক্ষেত্রেও তা ঘটেছে। বংশগত ও জেনেটিক কোনো কারণে এমনটি হয়েছে।
.
বন্ধুরা ! দেখলেন, রাসূলুল্লাহ সা. একজন নারীর ইজ্জত নিয়ে কুধারণা পোষণের সুযোগকে কিভাবে স্বাভাবিক করে দিলেন। ধ্বংসের কবল থেকে বাঁচিয়ে দিলেন একটি সংসার।
আসুন, মানুষ সম্পর্কে কুধারণা নয়; সুধারণা পোষণ করি।
৩৭৮
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
حب الدنیا رأس کل خطیئة . অর্থ : দুনিয়ার মুহাব্বাত......
১. নদীর পাড়ের বাড়ী। ২. ব্রেক ছাড়া গাড়ী। ৩. পর্দা......
বিজ্ঞানীর বাণী তোমরা এটা মনে করো না, জীবনে যে সফলতা......
ইসলামই নম্র আচরণ ও শালীন বচন শেখায় ইসলাম আমাদেরকে যে......
مفتاح الجنة الصلوة. অর্থ : নামায বেহেশতের চাবি। -মিশকাত শরীফ,......
গবেষণার গুরুত্ব অপরিসীম। গবেষণার মাধ্যমেই অজানাকে জানা, অচেনাকে চেনা এবং......
কুরঅান মাজীদ পাঠ করুন হযরত আবূ উমামাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে......
নামাযের হেফাজত করুন হযরত রাসুল (সা:) বলেন -যে ব্যক্তি নামাযের......
কুরআনের ১০০টি উপদেশ বাণী ১। তোমরা সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশিয়ে......
কুরঅান তিলাওয়াতে প্রকৃত মু'মিনের ঈমান বৃদ্ধি পায় প্রকৃত মু’মিন তো......