হাজ্জের গুরুত্ব এবং ফযীলত """"""""""""""""""""" ১. আল্লাহর নির্দেশ পালন : হাজ্জ একটি অন্যতম ফরজ ইবাদাত। হাজ্জ পালনের মাধ্যমে আল্লাহর নির্দেশ পালন হয়ে থাকে। আল্লাহ তায়ালা সামর্থবান মুসলিমের উপর হাজ্জ ফরজ করেছেন । কুরআনে এসেছে, ‘এবং সামর্থ্যবান মানুষের উপর আলাহর জন্য বায়তুলাহর হজ্জ করা ফরয। আরযে কুফরী করে, তবে আলাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী’। ( সূরা আলে ইমরান-৯৭) ২. যিকরুল্লাহ প্রতিষ্ঠা : হজ্জ এমন একটি ইবাদাত যার প্রত্যেকটি কাজে আল্লাহর যিকর করা হয়। তাওয়াফ, সাঈ, রমঈল জিমার (পাথর নিক্ষেপ),মিনা,মুযদালিফাহ, আরাফাহসহ প্রত্যেকটি নির্দেশনায় আল্লাহর যিকরে ধ্বনিত, প্রতিধ্বনিত হচ্ছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন,‘তারপর যখন তোমরা তোমাদের হজের কাজসমূহ শেষ করবে,তখন আলাহকে স্মরণ কর, যেভাবে তোমরা স্মরণ করতে তোমাদের বাপ-দাদাদেরকে, এমনকি তার চেয়ে অধিক স্মরণ। আর মানুষের মধ্যে এমনও আছে যে বলে, হে আমাদের রব, আমাদেরকে দুনিয়াতেই দিয়ে দিন। বস্ত্তত আখিরাতে তার জন্য কোন অংশ নেই।(সূরা আলবাকারাহ-২০০)। আল্লাহ আরো বলেন, সুতরাং যখন তোমরা আরাফা থেকে বের হয়ে আসবে,তখন মাশআরে হারামের নিকট আলাহকে স্মরণ কর এবং তাকে স্মরণ কর যেভাবে তিনি তোমাদেরকে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। যদিও তোমরা এর পূর্বে অবশ্যই পথভ্রষ্টদের অন্তর্ভুক্ত ছিলে।’(সূরা আলবাকারাহ-১৯৮) ৩. জাহান্নামদের আযাব থেকে মুক্তি দানঃ হজ্জ জাহান্নামের আগুন থেকে পরিত্রান দান করে। মহানবী (সঃ) বলেন; মহান আল্লাহ আরাফাতের দিন যত মানুষকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দান করেন অন্যকোন দিনে এত লোককে মুক্তি দেন না। (মুসলিম) ৪. হজ্জ পালনকারী সদ্যজাত শিশুর মত নিষ্পাপ হয়ে যায়: হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন; আমি রাসূল (সঃ) কে বলতে শুনেছি; যে ব্যক্তি হজ্জ করে এবং হজ্জকালে যৌন সম্ভোগ ও কোনপাপাচারী কাজে লিপ্ত হয় না। সে ব্যক্তি সদ্য মাতৃগর্ভ থেকে ভুমিষ্ট শিশুরমত নিষ্পাপ হয়েবাড়ি ফিরে যায়। (বুখারী ও মুসলিম) এক হাদীসে এসেছে, ‘তোমরা পর-পর হজ্জ ও উমরা আদায় করো। কেননা তা দারিদ্র ও পাপকে সরিয়ে দেয় যেমন সরিয়ে দেয় কামারের হাপর লোহা-স্বর্ণ-রুপার ময়লাকে। আর হজ্জে মাবরুরের প্রতিদান তো জান্নাত ভিন্ন অন্য কিছু নয়। (সহিহ নাসায়ী) ৫. হজ্জের এক মাত্র প্রতিদান জান্নাত:হাজ্জের বিনিময় জান্নাত ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না। হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত; মহানবী (সঃ)বলেন; একউমরাহ হতে অন্য উমরাহ অন্তরবর্তী কালীন সময় গুনাহের কাফ্ফারা হয়। আর মাবরূর(গৃহীত ) হজ্জের একমাত্র প্রতিদান হল জান্নাত। (বুখারী ও মুসলিম) ৬. বিধর্মী হওয়া থেকে মুক্তিঃ যাদের উপর হাজ্জ ফরয হওয়ার পর হাজ্জ না করে মৃত্যুবরণ করবে তাদের ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারী দেওয়া হয়েছে। রাসূল(সাঃ) বলেন, “যার উপর হাজ্জ ফরয হল অথছ সে যদি হাজ্জ না করে মৃত্যুবরণ করে তাহলে সে কি ইয়াহূদী হয়ে মরল নাকি খ্রিষ্টান হয়ে মরল তাতে আমার কিছু যায় আসে না।”3 ৭. উত্তম নেক আমলঃ যারা সঠিকভাবে হাজ্জ সম্পাদন করবে তারা ইসলামের একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাজ করার সৌভাগ্য অর্জন করবে।রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘উত্তম আমল কি এই মর্মে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে জিজ্ঞাসা করা হল। উত্তরে তিনি বললেন, ‘আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান। বলা হল, ‘তারপর কী’? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ। বলা হল তারপর কোনটি? তিনি বললেন, মাবরুর হজ্জ। (বুখারী) একদা রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-কে প্রশ্ন করে আয়েশা (রাঃ) বলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা কি আপনাদের সাথে জিহাদে ও অভিযানে যাব না? তিনি বললেন, ‘তোমাদের জন্য উত্তম ও সুন্দরতম জিহাদ হল ‘হজ্জ’, তথা মাবরুর হজ্জ।” (বুখারী) ৮. আল্লাহর উদ্দেশ্য পূর্ণঃ আল্লাহ পাক মানুষকে এই উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেছেন যে,তারা কেবলমাত্র এক আল্লাহর ইবাদত করবে। যারা হাজ্জ করবে তাদের সেই উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে।তাই আল্লাহ বলেন, [বাকারাঃ২০০] ৯. মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ লাভঃ যারা হাজ্জ পালন করবে তারা আমাদের প্রিয়নবী মুহাম্মদ(সাঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করার সৌভাগ্য অর্জন করবে। এই ব্যাপারে মুহাম্মদ(সাঃ) বলেন, “আমার মৃত্যর পর যে হাজ্জ করল আর আমার কবর যিয়ারত করল সে যেন আমার সাথে জীবিত অবস্থায় সাক্ষাৎ করল”। ১০. আল্লাহর নৈকট্য লাভঃ হাজ্জব্রত অবস্থায় আল্লাহর একজন প্রিয়বান্দা বিভিন্ন ধরনের আমল পালন করে।আল্লাহর যিকির করে থাকে।কাবা শরীফ প্রদক্ষিণ করে থাকে। এসকল আমলের মধ্য দিয়ে একজন বান্দা অতি সহজে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে পারে। ১১. চারিত্রিক বিশুদ্বতাঃ হাজ্জব্রত অবস্থায় মানুষ সহজে তার চারিত্রিক বিশুদ্বতা অর্জন করতে পারে।কারণ হাজ্জ অবস্থায় ঝগড়া করা,হাঙ্গামা সৃষ্টি করা, গীবত করা, হিংসা করা, কৃপনতা প্রদর্শন করা, অপচয় করা সম্পূর্ণরুপে নিষিদ্ব।তাই হাজীগণ এই সময় এসকল খারাপ কাজ থেকে নিজেদের বিরত রাখার জন্য চেষ্টা করে এবং এর দ্বারা সে তার চরিত্রকে পূত-পবিত্র করতে পারে। ১২. সামগ্রিক ইবাদত পালনঃ নামায এবং সাওম হল কেবল দৈহিক ইবাদত আর যাকাত হল আর্থিক ইবাদত।আর হাজ্জ এমন একটি ইবাদত যা কিনা দৈহিক এবং আর্থিক উভয় ইবাদতের সমন্বয়ে সাধিত হয়।তাই রাসূল(সাঃ) বলেন, “উত্তম জিহাদ হল হাজ্জ”। ১৩. আখিরাতের কথা স্মরণঃ হাজ্জের প্রত্যেকটি কাজ মানুষকে আখিরাতের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ১. এহরামের কাপড় গায়ে জড়িয়ে আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে হজ্জের সফরে রওয়ানা হওয়া কাফন পরে আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে আখেরাতের পথে রওয়ানা হওয়াকে স্মরণ করিয়ে দেয়।হজ্জের সফরে পাথেয় সঙ্গে নেয়া আখেরাতের সফরে পাথেয় সঙ্গে নেয়ার প্রয়োজনয়ীতাকে স্মরণ করিয়ে দেয়।এহরাম পরিধান করে পুত-পবিত্র হয়ে আল্লাহর দরবারে হাজিরা দেয়ার জন্য ‘লাব্বাইক’ বলা সমস্ত গুনাহ-পাপ থেকে পবিত্র হয়ে পরকালে আল্লাহর কাছে হাজিরা দেয়ার প্রয়োজনীয়তাকে স্মরণ করিয়ে দেয়। আরো স্মরণ করিয়ে দেয় যে এহরামের কাপড়ের মতো স্বচ্ছ-সাদা হৃদয় নিয়েই আল্লাহর দরবারে যেতে হবে।
৩৫৯
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
নামাযের ফরজ সমুহ নামাযে আহকাম শরীর পাক কাপড় পাক নামাযের......
ব্লু হোয়েল গেমস দ্বারা প্রভাবিত হয়ে যদি কোনো ব্যক্তি আত্মহত্যা......
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদের সৃষ্টিকর্তা, আমাদের সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তার......
সবরের গুরুত্ব @@@@@@#@ সবর বা ধৈর্য আল্লাহর পরিপূর্ণ মুমিন বান্দাদের......
কার উপর কুরবানী ওয়াজিব ************************** ১. প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থমস্তিষ্ক সম্পন্ন প্রত্যেক......
সবর কী? ---------------------- সবরের আভিধানিক অর্থ বাধা দেয়া বা বিরত......
জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধৈর্যের প্রয়োজন &&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&&& প্রতিটি পদক্ষেপে মুমিনের ধৈর্যের......
ইহরাম কি? ********** ُ (ইহরাম) শব্দটি حَرَامٌ (হারাম) শব্দ থেকে......
আয়াতুল কুরসি পাঠের ফজিলত @@@@@##@@@@@@@@@ আয়তুল কুরসিকে বলা হয় আল......
অন্যায়ভাবে কোন মুসলমানকে গালি দেয়া হারাম +++++++++++++++++++++++++++ আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ......