কোন কোন সময় মানুষ ইখলাস ও বিশুদ্ধ নিয়্যতে কাজ করতে উদ্যোগী হয়, কিন্তু তার সম্পদের সীমাবদ্ধতা, শারীরিক দুর্বলতা ইত্যাদির কারণে কাজটি সমাধা করতে পারে না। কখনো দেখা যায়, উক্ত ভাল কাজটি করার জন্য সে প্রবল প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, কিন্তু কোন কারণে কাজটি আঞ্জাম দিতে পারেনি। এমতাবস্থায় সে কাজটি সম্পন্ন করার সওয়াব পেয়ে যাবে এবং তার ইখলাসে কারণে কাজটি যারা করতে পেরেছে তাদের সমমর্যাদা লাভ করবে।
যেমন নবী কারীম রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ আমরা কয়েকটি দলকে মদীনায় রেখে এসেছি। তারা আমাদের সাথে কোন পাহাড় অতিক্রম করেনি, কোন উপত্যকাও মাড়ায়নি। অথচ তারা আমাদের সাথে অংশগ্রহণকারীর সমান মর্যাদা লাভ করবে। অক্ষমতা তাদেরকে আটকে রেখেছে। (বুখারী)
হাদীসে বর্ণিত সাহাবীগণ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম- এর সাথে অভিযানে অংশ নিতে পারেননি কোন অসুবিধার কারণে। কিন্তু তাদের বিশুদ্ধ নিয়ত ও ইখলাস ছিল অভিযানে অংশ নেয়ার জন্য। তাই তারা অংশ গ্রহণ না করেও অংশগ্রহণকারীদের সমান মর্যাদার অধিকারী হবেন।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ “যে ব্যক্তি শেষ রাতে তাহাজ্জুদ আদায় করবে- এ নিয়্যতে শুয়ে পড়ল। অবশেষে নিদ্রা তাকে কাবু করে ফেলল, এবং সকাল হওয়ার আগে জাগতে পারল না। এমতাবস্থায় সে যা নিয়ত করেছিল তা তার জন্যে লেখা হয়ে যাবে। এবং এ নিদ্রা তার প্রভুর পক্ষ থেকে দান হিসেবে ধরা হবে।” (নাসায়ী)
তাহাজ্জুদের নিয়ত করেও এ ব্যক্তি তাহাজ্জুদ পড়তে পারল না বটে কিন্তু ইখলাস ও বিশুদ্ধ নিয়তের কারণে সে তাহাজ্জুদের পূর্ণ সওয়াব পাবে।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ “যে বিশুদ্ধ মনে জিহাদে শরীক হয়ে আল্লাহর কাছে শহীদ হওয়া কামনা করবে, আল্লাহ তাকে শহীদের মর্যাদা দান করবেন যদিও সে বিছানায় মৃত্যুবরণ করে”। (মুসলিম)
ইখলাস বা আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার লক্ষ্যে যে শহীদ হওয়ার আকাংক্ষা করবে, সে শহীদ না হতে পারলেও আল্লাহ তাকে তার ইখলাসে কারণে শহীদের সমান মর্যাদা দান করবেন।
আরেকটি হাদীস উল্লেখ করা যেতে পারে, তা হল রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ
এক ব্যক্তি নিয়ত করল যে, আমি রাতে কিছু সাদাকাহ(দান) করব। যখন রাত এল সে সাদাকাহ করল। কিন্তু সাদাকাহ পড়ল এক ব্যভিচারী মহিলার হাতে। সকাল হলে লোকজন বলতে শুরু করল, গত রাতে জনৈক ব্যক্তি এক ব্যভিচারীকে সাদাকাহ দিয়েছে। এ কথা শুনে দানকারী বলল, হে আল্লাহ ! ব্যভিচারীকে সাদাকাহ দেয়ার ব্যাপারে তোমারই প্রশংসা।
আমি রাতে আবার একটি সাদাকাহ করব। পরের রাতে যখন সে সাদাকাহ করল, তা পড়ল একজন ধনীর হাতে। যখন সকাল হল তখন লোকজন বলাবলি শুরু করল গত রাতে জনৈক ব্যক্তি এক ধনীকে সাদাকাহ দিয়েছে। একথা শুনে দানকারী বলল, হে আল্লাহ ! ধনীকে সাদাকাহ দেয়ার ব্যাপারে তোমারই প্রশংসা।
আমি রাতে আবার একটি সাদাকাহ করব। যখন পরের রাতে সে সাদাকাহ করল, তা পড়ল একজন চোরের হাতে। যখন সকাল হল তখন লোকজন বলতে শুরু করল, গত রাতে এক ব্যক্তি এক চোরকে সাদাকাহ দিয়েছে। একথা শুনে দানকারী বলল, হে আল্লাহ ! ব্যভিচারী,ধনী ও চোরকে সাদাকাহ দেয়ার ব্যাপারে তোমারই প্রশংসা। তখন আল্লাহর পক্ষ থেকে তাকে বলা হল, ‘তোমার সকল সাদাকাহ(দান)-ই কবুল করা হয়েছে। সম্ভবত তোমার সাদাকাহর কারণে ব্যভিচারী মহিলা তার পতিতাবৃত্তি থেকে ফিরে আসবে। ধনী ব্যক্তি আল্লাহর পথে ব্যয় করতে উৎসাহী হবে। চোর তার চুরি কর্ম থেকে ফিরে আসবে। (বুখারী ও মুসলিম)
দেখুন, এ ব্যক্তি তার সাদাকাহ বা দান করার ব্যাপারে এতটাই ইখলাস (আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার নিয়্যত) গ্রহণ করেছিল যে, সাদাকাহ প্রদানে তার অতি গোপনীয়তা কাউকেই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে দেয়নি। এ গোপনীয়তা রক্ষার কারণে বার বার এ সাদাকাহ অনাকাংখিত হাতে পড়লেও সে তার ইখলাস থেকে সরে আসেনি। ইখলাস অবলম্বনে সে ছিল অটল। ফলে তার কোন সাদাকাহ ব্যর্থ হয়নি।
ইবনু হাজার রাহিমাহুল্লাহ বলেন, এ হাদীস দ্বারা বুঝে আসে দানকারী নিয়্যত বিশুদ্ধ থাকলে তার দান অনাকাংখিত হাতে পড়লেও তার দান বা সাদাকাহ আল্লাহর কাছে কবুল হবে। (ফাতহুল বারীঃ ইবনে হাজার)
৩৯৩
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
আল্লাহ আল-কোরাআনে বিভিন্ন জাগায় বলেছেন:- সূরা আনআমের ১৬২নং আয়াতে ঘোষণা......
লেখকঃ আবু ইয়াদ শয়তানের প্রকৃতি শয়তান কে? শয়তান বলে কি......
ইসলাম একটি একেশ্বরবাদী এবং আব্রাহামিক ধর্ম । কোরআন দ্বারা পরিচালিত......
আসসালামু-আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ্। আমি মোহাম্মদ আবু ছাদেক.চট্টগ্রাম থেকে বলতেছি।আমার আব্বু......
সূচীপত্র ক্রম শিরোনাম ১ অবতরণিকা ২ মুখবন্ধ ৩ আত্মীয়তার বন্ধন......
সকল প্রশংসা আল্লাহ তায়ালার জন্যে, আল্লাহ তায়ালার শান্তি ও রহমত......
নিয়তের ব্যাপারে ইখলাস অবলম্বন ও আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে আশ্রয়......
ইখলাস, কেন ও কিভাবে(১০ পৃষ্ঠার অসাধারণ এই বইটির পিডিএফ ডাউনলোড......
আসসালামু আলাইকুম। প্রশ্নঃ আমার এক বন্ধু মানত করেছে যে তার......
হাদীসের প্রথম প্রকার শ্রেণী বিভাগ হাদীস শাস্ত্রের পণ্ডিতগণ হাদীসকে প্রধানত......