সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

জুমার দিন কেন ফজিলতপূর্ণ?
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : শুক্রবার ২০/১০/২০১৭

জুমার দিন কেন ফজিলতপূর্ণ,,,?
 
ইয়াওমুল জুমআ’ বা শুক্রবার। অসহায় মুসলমানের হজের দিন। মু’মিন মুসলমানের ঈদের দিন। ঈমানদার মুসলমানের ঈমান বৃদ্ধির দিন। সর্বোপরি সপ্তাহের সেরা দিন শুক্রবার। আনন্দ-উৎসবের সঙ্গেই ছোট থেকে বড় সবাই জুমআ’র নামাজ আদায় করতে মসজিদে হাজির হয়। 

বাবা-দাদার হাত ধরে ছোট ছেলে ও নাতি মসজিদে আসে এ আনন্দ ভাগ করে নিতে। সে এক অপরূপ দৃশ্য। এ দৃশ্য অংকিত হয়ে তাকে আল্লাহর নিকট সংরক্ষিত আমলানামায়। জুমার নামাজ মুসলিম ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ভ্রাতৃত্বের শিক্ষা তুলে ধরে সমগ্র বিশ্বের সামনে।

আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, `
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا إِذَا نُودِي لِلصَّلَاةِ مِن يَوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا إِلَى ذِكْرِ اللَّهِ وَذَرُوا الْبَيْعَ ذَلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ إِن كُنتُمْ تَعْلَمُونَ

মুমিনগণ, জুমআর দিনে যখন নামাযের আযান দেয়া হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণের পানে ত্বরা কর এবং বেচাকেনা বন্ধ কর। এটা তোমাদের জন্যে উত্তম যদি তোমরা বুঝ।
[ সূরা জুমআ` : আয়াত ৯ ]।

 হাদিসেও জুমাআ`র নামাজের অনেক ফজিলত বর্ণিত হয়েছে। ঘোষিত হয়েছে তা আদায়কারীদের জন্য অনেক পুরস্কার।

জুমআ`র দিনের চমকপ্রদ ঘোষণা-
ক. সর্বোত্তম দিন : জুমআ`র দিন সপ্তাহের সাত দিনের মধ্যে সর্বোত্তম দিন। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহ আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "সূর্য উদয় হয়েছে এমন দিনগুলোর মধ্যে সর্বোত্ত দিন জুমআ`র দিন। এদিন হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এদিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়। এদিন তাকে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়। এদিনই  কিয়ামাত সংঘটিত হবে। (মুসলিম, তিরমিজি, নাসাঈ)

খ.  মুসলমানদের  মিলন মেলার  দিন : এদিনটির মধ্যে জুমআ`র নামাজ রয়েছে যা ইসলামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিধান। সমগ্র মুসলিম মিল্লাতের মিলনমেলার দিন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, "যে ব্যক্তি কোনো কারণ ছাড়া জুমআ`র নামাজ ছেড়ে দিবে, আল্লাহ তাআলা তার অন্তরে মোহর মেরে দিবেন। (মুসলিম) 

গ. চাওয়া-পাওয়া কবুল হওয়ার দিন : জুমআ`র দিনে একটি মুহূর্ত রয়েছে যে মুহূর্তে দোয়া করলে আল্লাহ তাআলা দোয়া কবুল করেন। তবে মুহূর্তটিকে অজ্ঞাত করে রাখা হয়েছে। যাতে মানুষ পুরো জুমআ`র দিনটিকে গুরুত্বসহকারে অনুসন্ধান করতে থাকে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "জুমআ`র দিন এমন একটি মুহূর্ত রয়েছে যদি কোনো বান্দাহ ঐ মুহূর্তে দাড়িয়ে সালাতরত অবস্থায় আল্লাহর নিকট কোনো কিছু প্রার্থনা করে আল্লাহ তাআলা তা অবশ্যই দিবেন। (বুখারি ও মুসলিম)
সময়টি কখন-

এ ব্যাপারে মতভেদ আছে। তবে হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত হলো দুটি-
১. ইমাম মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত সময়- হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "ইমাম মিম্বারে বসা থেকে নিয়ে সালাত শেষ করা পর্যন্ত। (মুসলিম, ইবনু খুজাইমা, বয়হাকি)

২. যাদুল মাআ`দ-এ বর্ণিত আছে- মুহূর্তটি হচ্ছে জুমআ`র দিন আছরের নামাজ আদায়ের পর।

ঘ. সাদকা করার উত্তম দিন : অন্যান্য দিনের তুলনা জুমআ`র দিন সাদকা করা তেমন উত্তম, যেমন সারা বছর সাদকা করার চেয়ে রমজানে সাদকা করা উত্তম। কা`ব ইবনে মালিক রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, "জুমআ`র দিনই সাদকা করা অন্যান্য দিন সাদকা করার তুলনায় অধিক ছাওয়াব ও গুরুত্বপূর্ণ। (মুসলিম)

ঙ. আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাতের দিন : জুমআ`র দিন জান্নাতিদের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা সাক্ষাৎ করবেন। তাফসিরে এসেছে- আল্লাহ তাআলা  প্রতি জুমআ`র দিন  জান্নাতিদের সাক্ষাতের জন্য প্রকাশ্যে আসেন।

চ. মুসলমানের সাপ্তাহিক ঈদের দিন : হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "এটি ঈদের দিন। আল্লাহ তাআলা মুসলমানদের জন্য নির্ধারণ করেছেন। যে ব্যক্তি জুম`আর নামাজে উপস্থিত হয়, সে যেন অজু করে উপস্থিত হয়। (ইবনু মাজাহ)

ছ. গুনাহ মাপের দিন : এদিন আল্লাহ বান্দার গুনাহ মাপ করেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যে ব্যক্তি জুমআ`র দিন গোলস করল, যথাযথ পবিত্রতা অর্জন করল, তেল লাগাল এবং ঘর থেকে আতর খুশবু লাগিয়ে বের হল, দুই ব্যক্তির মাঝে ফাঁক করে সামনে গেল না। অতপর তার তকদিরে যত নামাজ পড়া নির্ধারিত ছিল তা পড়ল, ইমামরে খুতবার সময় চুপ থাকল, তাহলে তার এ জুমআ` থেকে পরবর্তী জুমআ` পর্যন্ত সংঘটিত গুনাহসমূহ মাপ করে দেয়া হবে। (বুখারি)

জ. নফল রোজা ও তাহাজ্জুদের ছাওয়াব লাভ : জুমআ`র দিনের প্রতিটি পদক্ষেপে রয়েছে ছাওয়াবের ভাণ্ডার। যারা যথাযথ আদব রক্ষা করে জুমআ`র সালাত আদায় করে তাদের প্রতিটি পদক্ষেপের বিনিময়ে তাদের জন্য পুরো এক বছরের রোজা পালন এবং রাত জেগে তাহাজ্জুদ পড়ার সওয়াব লিখা হয়। হজরত ইবনে আউস আস সাকাফী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “জুমাআ`র দিন যে ব্যাক্তি গোসল করায় (অর্থাৎ সহবাস করে, ফলে স্ত্রী ফরজ গোসল করে এবং) নিজেও ফরজ গোসল করে, আগে আগে মসজিদে যায় এবং নিজেও প্রথম ভাগে মসজিদে গমন করে, পায়ে হেঁটে মসজিদে যায় (অর্থাৎ কোন কিছুতে আরোহণ করে নয়), ইমামের কাছাকাছি গিয়ে বসে, মনোযোগ দিয়ে খুৎবা শোনে, কোনো কিছু নিয়ে খেল তামাশা করে না; সে ব্যাক্তির প্রতিটি পদক্ষেপের জন্য রয়েছে বছরব্যাপী রোজা পালন ও সারা বছর রাত জেগে ইবাদত করার সমতুল্য ছাওয়াব।” (মুসনাদে আহমাদ)

ঝ. জাহান্নামের আগুন প্রজ্জলিত করা বন্ধ রাখার দিন : এ দিন জাহান্নামের দিনকে প্রজ্জলতি রাখা বন্ধ রাখে। যাদুল মাআ`দে এসেছে- সপ্তাহের প্রতিদিন জাহান্নামকে উত্তপ্ত করা হয়। জুমআ`র দিনের সম্মানে এদিনকে প্রজ্জলিত করা বা উত্তপ্ত করা বন্ধ রাখা হয়।

ঞ. জুমআ`র দিনবা রাত্রিতের মৃতু্য বরণ শুভ লক্ষণ : এ দিন বা রাত্রিতে মৃতু্য বরণ করা উত্তম পরিণতির লক্ষণ। কারণ এদিন বা রাত্রিতে যে ব্যক্তি মারা যায় সে ব্যক্তি কবরের আজাব বা মুনকার নকীরের প্রশ্ন থেকে বেঁচে যায়। হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, "যে কোনো মুসলিম জুমআ`র দিন  বা জুমআ`র রাতে মারা গেল; আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাকে কবরেরআজাব থেকে রেহাই দেবেন। (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি)

আমরা জুমআ`র নামাজ আদায় করে উপরোক্ত ফায়েদা ও ফজিলতগুলো লাভ করি। বাস্তবজীবনে ইসলামের পূর্ণাঙ্গ অনুসরণ করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সচেষ্ট হই। দোয়া কবুলের সময় রোনাজারি করি। আমাদের পরিবার পরিজনসহ সবাইকে নামাজে উদ্বুদ্ধ করি। আল্লাহ আমাদের কবুল করুন। আমিন।

 কুরআন-হাদিস মোতাবেক আমলি জিন্দেগি যাপন করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করুন। আমিন, ছুম্মা আমিন।

৩৬৪

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭