সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

প্রতিদিন ৭০ বার কবর আমাদের ডাকছে
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বুধবার ১৮/১০/২০১৭

প্রতিদিন ৭০ বার কবর আমাদের ডাকছে

♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♦♣♣♣♣♣♣♦♦♦♦♦♦♦

আমরা সব সময় সামনের কথাই ভাবি। সামনের দিনগুলো কীভাবে চলবে? কত টাকা উপার্জন করব, আমার ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করার জন্য আরও কী কী করা দরকার, সুখে-শান্তিতে দুনিয়ায় থাকতে হলে আরও কী কী করা যেতে পারে? এসব নিয়েই আমরা ভাবি। কিন্তু আমাদের সামনে যে অনন্ত জীবন পড়ে আছে, তার জন্য আমরা কতটুকু পরিকল্পনা করি? আমাদের কোনো প্রিয়জন মারা গেলে আমরা শোক প্রকাশ করি। কেউ কেউ পাগলের মতো প্রলাপ বকতে থাকি। কেউ বা বুক চাপড়িয়ে, পোশাক-পরিচ্ছদ ছিঁড়ে, মাথায় ধুলামাটি ছিটিয়ে কিংবা মাটিতে গড়াগড়ি করে বিলাপ করতে থাকি। কেউ কেউ এ অকাল মৃত্যুর জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে দায়ী করেন। তারা বলেন, হে আল্লাহ, তোমার কি কোনো দয়ামায়া নেই? তুমি কেমনে আমার বা-জানরে লইয়া গেলা? পৃৃথিবীতে আমরা সবাই মুসাফির বা ভ্রমণকারী। পার্থক্য একটাই কেউ আগে আসে আগে যায়, আর কেউ পরে আসে পরে যায়। পৃথিবীর জীবনকে যানবাহনের স্টেশনের সঙ্গেও তুলনা করা যায়। গাড়িগুলো যেমন একটা নির্দিষ্ট সময় স্টেশনে এসে থামে এবং কিছু যাত্রী নিয়ে আবার চলে যায়। তেমনি আল্লাহতায়ালা অসংখ্য আদমকে দুনিয়াতে নামিয়ে দিচ্ছেন এবং উঠিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। পৃথিবীর জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত। মূলত আমরা সবাই রূহের জগতে ছিলাম। সেখান থেকে একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমাদের পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছে। হায়াত শেষ হয়ে গেলে আবার আমাদের সেখানে চলে যেতে হবে। পবিত্র কোরআনের সূরা আল ইমরানের ১৪৫ আয়াতে বলা হয়েছে- আর আল্লাহর হুকুম ছাড়া কেউ মরতে পারে না। সেজন্য একটা সময় নির্ধারিত রয়েছে। আমাদের এ জীবন খুবই সংক্ষিপ্ত। পরকালের জীবনের কাছে দুনিয়ার জীবনের উদাহরণ হল বিশাল সাগরের পানি সম্ভারের তুলনায় এক ফোঁটা পানির মতো। ইসলামের দৃষ্টিতে আমরা আল্লাহর রহমতে আরোগ্য লাভ করি। যদিও এক্ষেত্রে ওষুধের ভূমিকা রয়েছে। তবুও ওষুধকে আরোগ্যদাতা হিসেবে ভাবা যাবে না। বরং মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনকে আরোগ্যদাতা হিসেবে গণ্য করতে হবে। অসুস্থতা সম্পর্কে হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেন, ‘মুমিন ব্যক্তি তার পাপের প্রায়শ্চিত্ত করা ছাড়া কখনও কষ্ট, দুর্ভোগ, অসুস্থতা, দুঃখ কিংবা মানসিক যন্ত্রণায় ক্লিষ্ট হয় না। আমরা অনেক সময় হায়াত বাড়িয়ে দেয়ার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করি। এটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত? পবিত্র হাদিসে বলা হয়েছে, ‘একদিন রাসূলের স্ত্রী উম্মে হাবিবা (রা.) আল্লাহর কাছে দীর্ঘ হায়াত কামনা করে দোয়া করছিলেন, এমন সময় রাসূল (সা.) এসে হাজির হন। তিনি বলেন, তুমি এমন এক বিষয়ের জন্য দেয়া করছ যেটা তিনি আগে থেকেই তোমাদের জন্য নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন এবং তোমাদের রিজিক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন এবং বণ্টনও নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন।’ আমাদের পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে মৃত্যুভয়ে আমরা ভীত হই। তাকে বাঁচানোর জন্য আমরা পাগল হয়ে যাই। দেশে-বিদেশে যার যার সাধ্যমতো বড় বড় ডাক্তার কবিরাজ দেখাই, যাতে সে সহজেই আরোগ্য লাভ করে। কিন্তু তারপরও সে আমাদের ছেড়ে চলে যায়। রূহ কবজের প্রক্রিয়া সম্পর্কে মিরাজ সম্পর্কিত হাদিসগুলোয় বলা হয়েছে, মৃত্যুর ফেরেশতার সামনে একটি তালিকা রয়েছে। যার মৃত্যু ঘনিয়ে আসে তার নাম ওই তালিকা থেকে মুছে ফেলা হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে মৃত্যুর ফেরেশতা তার সামনে এসে হাজির হন। মৃত ব্যক্তির জন্য আমরা কান্নাকাটি করি। আমাদের সমাজে একটি ধারণা প্রচলিত আছে- কারও স্ত্রী মারা গেলে তার স্বামী যদি সে স্ত্রীর জন্য এক ফোঁটা চোখের পানি ফেলে তাহলে সে স্ত্রীর জন্য দোজখের আগুন নিভে যাবে। অথচ রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘জীবিত ব্যক্তিদের কান্নায় মৃত ব্যক্তি কষ্ট পায়। সুতরাং কারও মৃত্যুতে উচ্চস্বরে কান্না না করে তার জন্য দোয়া করা উচিত। মৃত্যুর জন্য আমাদের সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এজন্য অবশ্যই দুনিয়ার জীবনের চেয়ে আখিরাতের জীবনকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। সেজন্য আমরা সবাই কোরআন ও হাদিস বুঝে পড়ব, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ গুরুত্বের সঙ্গে আদায় করব। জাকাত প্রদানে কার্পণ্য করব না। যে কোনো ধরনের গুনাহ থেকে বিরত থাকব, ছোট গোনাহকে অবহেলা করব না। মা-বাবার খেদমত করব এবং কারও হক নষ্ট করব না। মৃত্যু আমাদের অতি কাছে। মহানবী (সা.) সাহাবিদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমি যখন নামাজে ডানে সালাম ফিরাই তখন মনে হয় বামে সালাম ফেরাতে পারব না। এর মধ্যে মৃত্যু এসে যেতে পারে।’ আমাদের ভাবতে হবে প্রতিদিন ৭০ বার কবর আমাদের ডাকছে। সে ডাকে একদিন আমাদের সাড়া দিতে হবে। কিন্তু সেখানে যে যাব, কী নিয়ে যাব? যে কোনো সময় আমাকে-আপনাকে মৃত্যুর ফেরেশতা পাকড়াও করতে পারে। তখন আমাদের কী অবস্থা হবে? আমরা কী জবাব দেব কবরে? হাশরে, মিজানে কীভাবে পার হব পুলসেরাত? আল্লাহতায়ালা আমাদের সঠিকভাবে ইবাদত করার তৌফিক দিন, আমরা যেন ঈমানের সঙ্গে মৃত্যুবরণ করতে পারি। আমিন। ( সংকলিত

 মুহাম্মদ শাহ জাহান কুতুবী

শিক্ষক আধুনগর ইসলামিয়া ফাযিল (ডিগ্রী) মাদ্রাসা লোহাগাড়া ,চট্টগ্রাম

১৩১৭

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭