শবে বরাতের রাত্রিতে যেসব ইবাদত করা যায় তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো- মাওলানা মোঃ আব্দুল হালিম . শবে বারাতের নামায:::::: শবে বারাতে নির্দিষ্ট করে কোন নামায নেই তবে ৪, ৬, ৮, ১০, ১২, ৫০,১০০ রাকায়াত নফল নামায পড়া যেতে পারে। وَعَنْ عَلِيٍّ قَالَ: حَدَّثَنِي أَبُو بَكْرٍ وَصَدَقَ أَبُو بَكْرٍ. قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ يَقُولُ: مَا مِنْ رَجُلٍ يُذْنِبُ ذَنْبًا ثُمَّ يَقُومُ فَيَتَطَهَّرُ ثُمَّ يُصَلِّي ثُمَّ يَسْتَغْفِرُ اللّهَ إِلَّا غَفَرَ الله لَه ثُمَّ قَرَأَ هذِه الاية: ﴿وَالَّذِيْنَ إِذَا فَعَلُوْا فَاحِشَةً أَوْ ظَلَمُوْا أَنْفُسَهُمْ ذَكَرُوا اللهَ فَاسْتَغْفِرُوْا لِذُنُوْبِهِمْ﴾ [آل عمران 3 : 135]. رَوَاهُ التِّرْمِذِيُّ وَابْنُ مَاجَهْ إِلَّا أَنَّ ابْنَ مَاجَهْ لَمْ يَذْكُرِ الْايَةَ ‘আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, আমীরুল মু’মিনীন আবূ বাকর সিদ্দীক্ব (রাঃ) আমাকে বলেছেন এবং তিনি সম্পূর্ণ সত্য বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছি : যে কোন লোক অন্যায় করার পর (লজ্জিত হয়ে) উঠে গিয়ে উযূ করে ও সালাত আদায় করে এবং আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে, আল্লাহ তা‘আলা তার গুনাহ ক্ষমা করে দেন। তারপর তিনি এ আয়াত পড়লেন (মূল আয়াত হাদীসে আছে) : -“এবং যেসব লোক এমন কোন কাজ করে বসে যা বাড়াবাড়ি ও নিজেদের ওপর যুলম, এরপর আল্লাহর কথা স্মরণ হয়, তখন নিজেদের গুনাহের জন্যে আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকে”- (সূরাহ আ-ল ‘ইমরান ৩ : ১৩৫)। (তিরমিযী ও ইবনু মাজাহ; কিন্তু ইবনু মাজাহ উপরোক্ত আয়াত উল্লেখ করেননি)। [১] সহীহ : আত্ তিরমিযী ৪০৬, ইবনু মাজাহ্ ১৩৯৫, আহমাদ ২, সহীহ আত্ তারগীব ৬৮০। وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللّهِ ﷺ يَقُولُ: «إِنَّ أَوَّلَ مَا يُحَاسَبُ بِهِ الْعَبْدُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مِنْ عَمَلِه صَلَاتُه فَإِنْ صَلُحَتْ فَقَدْ أَفْلَحَ وَأنْجَحَ وَإِنْ فَسَدَتْ فَقَدْ خَابَ وَخَسِرَ فَإِنِ انْتَقَصَ مِنْ فَرِيْضَتِه شَيْءٌ قَالَ الرَّبُّ تَبَارَكَ وَتَعَالى: نظرُوا هَلْ لِعَبْدِىْ مِنْ تَطَوُّعٍ؟ فَيُكَمَّلُ بِهَا مَا انْتَقَصَ مِنَ الْفَرِيضَةِ ثُمَّ يَكُونُ سَائِرُ عَمَلِه عَلى ذلِكَ». وَفِي رِوَايَةٍ: «ثُمَّ الزَّكَاةُ مِثْلَ ذلِك ثمَّ تُؤْخَذُ الْأَعْمَالُ حَسْبَ ذلِكَ» . رَوَاهُ أَبُو دَاوُدَ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃতিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ইরশাদ করেছেনঃ ক্বিয়ামাতের দিন সব জিনিসের পূর্বে লোকের যে ‘আমালের হিসাব হবে, তা হলো সলাত। যদি তার সলাত সঠিক হয় তাহলে সে সফলকাম হবে ও নাজাত পাবে। আর যদি সলাত বিনষ্ট হয়ে যায় তাহলে সে বিফল ও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। যদি ফার্য সলাতের কিছু ভুল হয়ে যায়, তাহলে আল্লাহ তা’আলা মালায়িকাহ-কে (ফেরেশ্তাগণকে) বলবেন, দেখো! আমার বান্দার নিকট সুন্নাত ও নাফ্ল সালাত আছে কি-না? তাহলে সেখান থেকে এনে বান্দার ফার্য সালাতের ত্রুটি পূরণ করে দেয়া হবে। এরপর এ রকম বান্দার অন্যান্য হিসাব নেয়া হবে। অন্য এক বিবরণ এসেছে, তারপর এ রকম যাকাতের হিসাব নেওয়া হবে। অতঃপর অবশিষ্ট সব ‘আমালের হিসাব একের পর এক এ রকম নেয়া হবে। (আবূ দাঊদ) ১] সহীহ : আত্ তিরমিযী ৪১৩, নাসায়ী ৪৬৫, সহীহ আত্ তারগীব ৫৪০, সহীহ আল জামি‘ ২০২০; আবূ দাঊদ ৮৬৪, ৮৬৬।
শবে বরাতের নামাযের নিয়্যাত نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلّٰهِ تَعَالٰى رَكْعَتَىْ صَلٰوةِ الَّيْلَةِ الْبَرَاَتِ النَّفْلِ مُتَوَجِّهًا اِلٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللّٰهُ اَكْبَرُ- উচ্চারণ-নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকাতাই সালাতিল্ লাইলাতিল বরাআতিন্নাফলি মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কাবাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার। এই নামাযের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা কদর একবার ও ইখলাস, যতবার সুবিধা পড়তে হয়। দুই দুই রাকাত করে মোট বার রাকাত নামায পড়তে হয়। নামায শেষে দোয়া দুরূদ কালেমা, সূরা ইয়াসীন, সূরা আররাহমান প্রভৃতি পাঠ করা অত্যন্ত সাওয়াবের কাজ। ক্বাযা নামায নামাযের নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হয়ে যাওয়ার আগে কেউ যদি ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় ওয়াক্বতের নামায না পড়ে, তবে তাকে পরবর্তীতে অন্য সময় এ নামায পড়ে নিতে হবে। এভাবে নামায নির্ধারিত সময় ব্যতীত অন্য সময় পড়াকে ক্বাযা বলে। আর নির্ধারিত সময়ে নামায পড়াকে আদা বলে। ক্বাযা নামাযের সংখ্যা যদি পাঁচ বা তদপেক্ষা কম হয়, তবে তারতীব বা ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব। অর্থাৎ প্রথমে ফজর তারপর যোহর তারপর আছর তারপর মাগরিব ও তারপর এশার নামায ক্বাযা পড়তে হবে। তদ্রপ সময় সংকীর্ণ না হলে কিংবা নামায পড়ার বিধি নিষেধ না থাকলে আদা এর পূর্বেই ক্বাযা পালন করতে হবে। শুধু ফরয ও ওয়াজিব নামাযেরই ক্বাযা পড়তে হয়। সুন্নাত ও নফলের ক্বাযা নেই। অবশ্য নিয়্যত করে শুরু করার কারণে সুন্নাত নফলও ওয়াজিব হয়ে যায়। ফজরের দু’রাকাত সুন্নাত নামায অধিকতর তাগিদ বিশিষ্ট সুন্নাত হওয়ার কারণে ক্বাযা হলে সেটার ক্বাযা করতে হয়। ক্বাযা নামাযের নিয়্যাত ক্বাযা নামাযের নিয়্যাত করা সময় উসাল্লিয়া এর স্থলে আক্বদ্বিয়া বলে নিয়্যাতের অন্যান্য শব্দাবলী যথারীতি উচ্চারণ করে নিয়্যাত করতে হবে। অবশ্য ক্বাযা নামাযের সংখ্যা ছয় ওয়াক্ত বা ততোধিক হয়ে গেলে তারতীব বা ধারাবাহিকতা রক্ষা করা ওয়াজিব থাকে না বরং হিসাব রেখে ক্বাযা নামাযগুলো সম্পন্ন করে নিতে হবে। তাহাজ্জুদের নামাযঃ এ নামাযের সময় হচ্ছে-রাতে ঘুম থেকে উঠার পর হতে শুরু হয়ে সুবহে সাদেক্ব পর্যন্ত। এ নামায সর্বাধিক ১২ রাকত। দু’দু’ রাকাত করে নিয়্যাত বেধে প্রত্যেক রাকাতে একবার আলহামদু ও ৩ বার সূরা ইখলাস বা অন্য যে কোন সূরা মিলিয়ে এ নামায পড়তে হয়। তারপর সাধ্যমত অন্যান্য দোয়া দুরূদ পড়ে মুনাজাত করা চাই। এ নামাযে দেহ ও মনের রোগমুক্তি এবং নিজের মা-বাপ বংশধরগণসহ বিশ্ব মুসলিমের গুনাহ মাফের জন্য দোয়া করা অতীব ফলদায়ক।
ফযীলতঃ হাদীস নং-১. রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট অতি প্রিয় হচ্ছে রাতের নামায। তাহাজ্জুদ যে ব্যক্তি প্রত্যেহ পড়বেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে অবশ্যই স্বপ্ন যোগে দর্শন দান করবেন। হাদীস নং-২. রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ফরয নামাযের পর তাহাজ্জুদ নামাযের মত ফযীলতপূর্ণ অন্য কোন নামায নেই। (আবু দাউদ) হাদীস নং-৩. রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, তাহাজ্জুদের নামায আদায়কারীর উপর আল্লাহ তায়ালা এত খুশী হয়ে যান যে, তিনি স্বীয় রহমতের সবগুলো দরজা খুলে দিয়ে ঐ বান্দার প্রতি মুহব্বতের কারণে সর্বনিম্ন আকাশে স্বীয় তাজাল্লী বিচ্ছুরিত করেন। (আবু দাউদ) হাদীস নং-৪. হযরত আবু হোরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমান, আমলকারী স্বামী-স্ত্রী যখন তাদের শয্যা ছেড়ে তাহাজ্জুদ নামাযের জন্য উঠে যায়, তখন আল্লাহ খুশী হয়ে ফিরিশতাগণকে ডেকে বলতে থাকেন, ওহে ফিরিশতাগণ! দেখ দেখ! ওরা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে যে আগে উঠেছে, সে অপরের গায়ে পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে উঠতে চায়না বলে। (নাসাঈ) ইরশাদুত ত্বালেবীন নামক কিতাবে লিখা আছে, নিয়মিতভাবে তাহাজ্জুদ নামায আদায়কারীকে হাশর ময়দান হতে বেহেশতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য হযরত আদম সফীউল্লাহ আলাইহিস সালাম, হযরত ইব্রাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম, হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম এবং স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু তায়ালা আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তার প্রধান চারজন সাহাবা হযরত আবু বকর, হযরত ওমর, হযরত ওসমান, হযরত আলী রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও প্রধান চারজন ফিরিশতা হযরত জিব্রাঈল, মীকাঈল, ইসরাফীল ও আযরাঈল আলাইহিমুস সালাম জামায়াত সহকারে আসবেন।
তাহাজ্জুদ নামাযের নিয়্যাত نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلّٰهِ تَعَالٰى رَكْعَتَىْ صَلٰوةِ التَّهَجُّدِ- سُنَّةُ رَسُوْلِ اللّٰهِ تَعَالٰى مُتَوَجِّهًا اِلٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللّٰهُ اَكْبَرُ- উচ্চারণ- নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা রাকআতাই সালাতিত তাহাজ্জুদ। সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
১।ছালাতুত তাসবীহ নামায: :::::অতঃপর ছালাতুত “মিশকাত শরীফ”-এর ১১৭ পৃষ্ঠায় হাদীস নং : ১৩২৮ আরো স্পষ্ট করে উল্লেখ আছে দেখুন.... তাসবীহ-এর নামায পড়বে, যার দ্বারা মানুষের সমস্ত গুণাহ ক্ষমা হয়। সালাতুত্তাসবীহর নিয়্যাত- نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ لِلهِ تَعَالٰى اَرْبَعَ رَكْعَاتِ صَلٰوةِ التَّسْبِيْحِ- سُنَّةُ رَسُوْلِ اللّٰهِ تَعَالٰى مُتَوَجِّهًا اِلٰى جِهَةِ الْكَعْبَةِ الشَّرِيْفَةِ اَللهُ اَكْبَرُ- উচ্চারণ- নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি তায়ালা আরবায়া রাকআতি সালাতিত তাসবীহ। সুন্নাতু রাসূলিল্লাহি তায়ালা মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি আল্লাহু আকবার।
৩৯০
১
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
ধর্ষণ কেন হয়? একটি মনস্তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা উপস্থাপনায়----- মাওলানা মোঃ আব্দুল......
শবে বরাতের রাত্রিতে যেসব ইবাদত করা যায় তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা......