সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

দাড়ি রাখা ও না রাখা প্রসংগে আলোচনা।
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : শুক্রবার ০৫/১০/২০১৮

(সংগ্রহ)

প্রশ্নঃ দাড়ি রাখা কি ওয়াজিব? দাড়ি শেভ করা বা কামানো কি পাপ?
উত্তরঃ দাড়ি রাখা সম্পর্কে ভ্রান্ত ধারণা দূর করুনঃ

শুধু আমাদের দেশেই না বেশীরভাগ দেশেই দাড়ি রাখা সম্পর্কে একটি ভ্রান্ত ধারণা আছে, সেটা হল ''দাড়ি রাখা সুন্নত; অতএব দাড়ি রাখলে ভাল আর না রাখলে তেমন কোন সমস্যা নেই, একটা সুন্নত পালন করা হল না এই আর কি।'' জেনে রাখুন, এটা সম্পূর্ণ একটা ভুল ধারণা।

দাড়ী আল্লাহর একটি মহান ও বড় নে’য়ামত। দাড়ী দ্বারা তিনি পুরুষকে অনুগৃহীত করেছেন এবং নারী জাতি থেকে তাকে বৈশিষ্ট মন্ডিত করেছেন। দাড়ী শুধুমাত্র মুখমন্ডলের উপর কয়েকটি
কেশগুচ্ছই নয়; বরং ইহা ইসলামের বাহ্যিক বড় একটি নিদর্শন। দাড়ী ছেড়ে রেখে এবং তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে পারি। আল্লাহ্ বলেন,
ﺫَﻟِﻚَ ﻭَﻣَﻦْ ﻳُﻌَﻈِّﻢْ ﺷَﻌَﺎﺋِﺮَ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻓَﺈِﻧَّﻬَﺎ ﻣِﻦْ ﺗَﻘْﻮَﻯ ﺍﻟْﻘُﻠُﻮﺏِ
“এই কারণে যে ব্যক্তি আল্লাহর নিদর্শন সমূহের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে, এটা তো তার হৃদয়ের তাকওয়ারই পরিচয়।” [ সূরা হাজ্জ- ৩২]

দাড়ী মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর অনুসৃত নীতির একটি অন্যতম পরিচয়। তিনি দাড়ী ছেড়ে দিতে ও লম্বা করতে আদেশ করেছেন। কিন্তু বড়ই পরিতাপের বিষয় যে, দাড়ীর প্রতি এত গুরুত্ব ও তার প্রতি সম্মানের নির্দেশ থাকা সত্বেও অধিকাংশ মুসলমান বিষয়টিকে অতি নগন্য ও তুচ্ছ মনে করে। যেন ঘৃণা ভরে প্রতিদিন তা ছেঁচে ফেলতে মহা ব্যস্ত হয়ে পড়ে। যারা মুন্ডন করে না তারা আরেক ষ্টাইলে তার সাথে খেলা-ধুলা করে। কেউ শুধুমাত্র থুতনীর উপর ছোট ছোট করে রাখে আবার কেউ খুবই হালকা করে কাল একটি রেখার মত করে রাখে। কেউ আবার দাড়িকে গোঁফের সাথে মিলিয়ে দিয়ে গোলাকৃতী করে রাখে।

এই চিত্রগুলো দেখলে একদিকে যেমন দুঃখ লাগে অন্য দিকে তা যেন হাস্যেরও পাত্র। যে মুসলমানকে দাড়ী ছেড়ে দিতে আদেশ করা হয়েছে, দাড়ীকে সম্মান করতে বলা হয়েছে সেই মুসলমান তো দূরের কথা কোন বিবেকবানের পক্ষেও এরকম আচরণ করা শোভনীয় নয়।
 
বড়ই পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, আল্লাহ্ তা’আলা যে আকৃতিতে দাড়ীকে সৃষ্টি করেছেন সে অবস্থাতেই তা নিজ মুখমন্ডলে অবশিষ্ট রেখে ইসলামী শিষ্টাচারের প্রতি সম্মান প্রদর্শনকারী এরকম সভ্য মানুষের সংখ্যা আজ খুবই বিরল। (লা হাউলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ্)

দাড়ী মুন্ডন হারাম হওয়ার দলীলঃ

আল্লাহ্ বলেন,
ﻭَﻟَﺂَﻣُﺮَﻧَّﻬُﻢْ ﻓَﻠَﻴُﻐَﻴِّﺮُﻥَّ ﺧَﻠْﻖَ ﺍﻟﻠَّﻪِ
“(শয়তান বলে) আমি অবশ্যই তাদেরকে আদেশ করব, তারা তখন আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করে দিবে।” [ সূরা নিসাঃ ১১৯]

দাড়ী মুন্ডন করা বা কর্তন করা আল্লাহর সৃষ্টিকে পরিবর্তন করার শামিল। আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
"দশটি জিনিস স্বভাবজাত। তম্মধ্যে তিনি উল্লেখ করেছেনঃ গোফ কর্তন করা ও দাড়ী ছেড়ে দেয়া।" [ মুসলিম]

অতএব গোঁফ লম্বা করা আর দাড়ী কেটে ফেলা সুস্থ স্বভাব বিরোধী কাজ।

ইবনে ওমার (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
ﺧَﺎﻟِﻔُﻮﺍ ﺍﻟْﻤُﺸْﺮِﻛِﻴﻦَ ﻭَﻓِّﺮُﻭﺍ ﺍﻟﻠِّﺤَﻰ ﻭَﺃَﺣْﻔُﻮﺍ ﺍﻟﺸَّﻮَﺍﺭِﺏَ
“তোমরা মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ী ছেড়ে দাও এবং গোঁফ ছোট কর।” [বুখারী ও মুসলিম]

আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন,
ﺟُﺰُّﻭﺍ ﺍﻟﺸَّﻮَﺍﺭِﺏَ ﻭَﺃَﺭْﺧُﻮﺍ ﺍﻟﻠِّﺤَﻰ ﺧَﺎﻟِﻔُﻮﺍ ﺍﻟْﻤَﺠُﻮﺱَ
“গোঁফ ছেঁটে ফেল এবং দাড়ী লম্বা কর আর এর মাধ্যমে অগ্নী পুজকদের বিরোধীতা কর।” [ মুসলিম]

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, যাবতীয় বিষয়ে মুশরিক-হিন্দু, ইহূদী-খৃষ্টান ও অগ্নী পুজকদের বিরোধীতা করা প্রতিটি মুসলমানের উপর ওয়াজিব।

এ জন্যে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“যারা কোন জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে,
সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত হবে।” [ আবু দাউদ, আহমাদ হাদীছ সহীহ ]

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আরো বলেন,
ﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺄْﺧُﺬْ ﻣِﻦْ ﺷَﺎﺭِﺑِﻪِ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻣِﻨَّﺎ
“যে ব্যক্তি গোঁফ কাটে না সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়।” [ তিরমিযী, নাসাঈ, হাদীছ সহীহ ]

রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর নির্দেশ ওয়াজিব বা আবশ্যকতার দাবী রাখে। অন্য দিকে দাড়ী মুন্ডন করার মাধ্যমে নিজেকে নারীদের কাতারে শামিল করা হয়। কেননা নারীরা দাড়ী বিহীন । কোন নারী যদি পুরুষের আকৃতি ধারণ করে এবং কোন পুরুষ যদি নারীর আকৃতি ধারণ করে তবে তারা লা’নতপ্রাপ্ত।

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নারীর সাদৃশ্য অবলম্বনকারী পুরুষকে এবং পুরুষের সাদৃশ্য অবলম্বনকারীনী নারীকে অভিশাপ করেছেন।” [ছহীহ আবু দাউদ, তিরমিযী]

দাড়ী রাখা ওয়াজিব না সুন্নাত?

এ নিয়ে মানুষ মতোবিরোধ করলেও দাড়ী রাখা যে ওয়াজিব সেটাই প্রনিধাণযোগ্য ও গ্রহণযোগ্য কথা। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দাড়ী রেখেছেন বলেই ইহা নবীজীর সুন্নাত বলে তার গুরুত্ব কমিয়ে দেয়ার কোন সুযোগ নেই। কেননা নবীজী দাড়ী নিজে রেখেছেন এবং তা রাখার জন্যে নির্দেশও দিয়েছেন। আর
আল্লাহ্ তা’আলা যেমন ফরয করেন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ও তেমনি ফরয বা ওয়াজিব করেন। তার কারণ হচ্ছে নবীজী কখনো নিজের কল্পনা প্রসূত কোন কথা বলতেন না। আল্লাহ্ তাঁর নিকট যা ওহী করতেন তিনি তাই বলতেন। (সূরা নজমঃ ৩,৪) 

তাছাড়া নবীজী দাড়ীর বিষয়ে যে সকল আদেশ সূচক শব্দ ব্যবহার করেছেন তার বিপরীতে এমন কোন হাদীছ খুঁজে পাওয়া যাবে না যা দ্বারা দাড়ীকে সুন্নাত বা মুস্তাহাব সাব্যস্ত যাবে।
তিরমিযীতে একটি হাদীছে বলা হয়েছেঃ
ﻛﺎﻥ ﻳﺄﺧﺬ ﻣﻦ ﻟﺤﻴﺘﻪ ﻣﻦ ﻋﺮﺿﻬﺎ ﻭﻃﻮﻟﻬﺎ
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) দৈর্ঘ ও প্রস্ত দিক থেকে তাঁর দাড়ী কাটতেন।” এ হাদীছটি মওযু বা জাল যার কোন ভিত্তি নেই। ইমাম তিরমিযী
হাদীছটি বর্ণনা করার পর নিজেই একথার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। [ দ্রঃ ছহীহ তিরমিযীঃ হা/২৭৬২]

ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহঃ) বলেন, দাড়ী মুন্ডন করা হারাম। ইমাম কুরতুবী (রঃ) বলেন, দাড়ী মুন্ডান, উঠানো বা কর্তন করা কোনটাই জায়েয নয়। শায়খ বিন বায (রঃ) বলেন, দাড়ীকে সংরক্ষণ করা, পরিপূর্ণ রাখা ও তা ছেড়ে দেয়া ফরয। এই ফরযের প্রতি অবহেলা করা জায়েয নয়। 

শাইখ ইবনে উসাইমীন (রঃ) বলেন, দাড়ী রাখা ওয়াজিব,
উহা মুন্ডন করা হারাম বা কাবীরা গুনাহ।

প্রসিদ্ধ চার মাযহাবের ফিকাহবিদগণও দাড়ী ছেড়ে দেয়া ওয়াজিব ও কেটে ফেলাকে হারাম বলে মত প্রকাশ করেছেন।

হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ গ্রন্থ র্দুরে মুখতারে (২য় খন্ড/৪৫৯ পৃঃ) বলা হয়েছেঃ পুরুষের জন্য দাড়ী কর্তন করা হারাম। নিহায়া গ্রন্থে বলা হয়েছে যে, দাড়ী এক মুষ্টির বেশী হলে তা কেটে ফেলা ওয়াজিব। কিন্তু এর চাইতে বেশী কর্তন করা যেমনটি পশ্চিমা দেশের লোকেরা এবং খোঁজা পুরুষেরা করে তা কেউ বৈধ বলেননি। আর দাড়ী সম্পূর্ণটাই কেটে চেঁছে ফেলা হিন্দুস্থানের ইহূদী ও কাফের-মুশরেকদের কাজ।”
মালেকী মাযহাব মতে দাড়ী কাটা হারাম। (আল আদাভী আলা শারহে কিফায়াতুত্ তালেব রাব্বানী ৮ম খন্ড ৮৯ পৃঃ)

ইমাম শাফেঈ (রহঃ) তাঁর প্রখ্যাত গ্রন্থ ‘আল উম্ম’ উল্লেখ করেছেন যে, দাড়ী কর্তন করা হারাম।
শাফেঈ মাযহাবের আলেম আযরাঈ বলেনঃ সঠিক কথা হচ্ছে কোন কারণ ছাড়া সম্পূর্ণ দাড়ী মুন্ডন করা হারাম। (হাওয়াশী শারওয়ানী ৯ম খন্ড ৩৭৬ পৃঃ)
হাম্বলী মাযহাবের বিদ্বানগণও দাড়ী মুন্ডনকে হারাম বলেছেন। (ইনসাফ, শরহে মুন্তাহা)

অতএব দাড়ী মুন্ডন করা বড় পাপ। এ থেকে তওবা করা আবশ্যক। অবশ্য দাড়ী মুন্ডন করা ও কেটে ছোট করার পাপ এক সমান নয়। যদিও উভয়টিই পাপের কাজ। অনেক মানুষ দাড়ী মুন্ডন করাটাকে খুবই ছোট ও তুচ্ছ ব্যাপার মনে করে। কিন্তু ইহা মুন্ডন করা কোন সময় সবচেয়ে বড় গুনাহের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত হতে পারে। কেননা এটা প্রকাশ্যে পাপের কাজে লিপ্ত হওয়ার অন্যতম। আর প্রকাশ্যে এভাবে অন্যায়ে লিপ্ত হয়ে তওবা না করলে হতে পারে দাড়ী মুন্ডনকারী আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাবে না। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেন,
ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻲ ﻣُﻌَﺎﻓًﻰ ﺇِﻻ ﺍﻟْﻤُﺠَﺎﻫِﺮِﻳﻦَ
“আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করা হবে। কিন্তু যারা প্রকাশ্যে পাপের কাজে লিপ্ত হয় তাদেরকে ক্ষমা করা হবে না।” [বুখারী ও মুসলিম ]

তাছাড়া কোন মানুষ যদি দাড়ীকে অপছন্দ করে বা তা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে অথবা দাড়ীওয়ালা মানুষকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে,
তবে সম্ভাবনা আছে একারণে সে ইসলাম থেকে বের হয়ে কুফরীতে লিপ্ত হবে এবং মুরতাদ হয়ে যাবে। কেননা নবী (ছাঃ) যা নিয়ে এসেছেন তা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করা বা ব্যঙ্গ করা বা তা ঘৃণা ও অপছন্দ করা ইসলাম ভঙ্গ হওয়ার অন্যতম একটি কারণ। 

আল্লাহ্ বলেন,
ﺫَﻟِﻚَ ﺑِﺄَﻧَّﻬُﻢُ ﺍﺗَّﺒَﻌُﻮﺍ ﻣَﺎ ﺃَﺳْﺨَﻂَ ﺍﻟﻠَّﻪَ ﻭَﻛَﺮِﻫُﻮﺍ ﺭِﺿْﻮَﺍﻧَﻪُ ﻓَﺄَﺣْﺒَﻂَ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟَﻬُﻢْ
“এই কারণে যে, তারা এমন বস্তুর অনুসরণ করেছে যার প্রতি আল্লাহ্ রাগাম্বিত। আর তারা তাঁর সন্তুষ্টিকে অপছন্দ করেছে। ফলে তিনি তাদের আমলগুলো বরবাদ করে দিয়েছেন।” [ সূরা মুহাম্মাদঃ ২৮]

সাবধান মুসলমান! নিজের আমল বরবাদ করবেন না বা অজ্ঞতা বশতঃ ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবেন না।

প্রিয় ভাই! সালাত সিয়াম ও অন্যান্য ওয়াজিব বিষয়ে আপনি যেমন আপনার পালনকর্তার আনুগত্য করেছেন। 
কেন এই বিষয়টিতে তাঁর নাফরমানী করছেন?
 উভয় বিষয়ের আদেশকারী রব কি একজনই নয়? 
কোথায় আল্লাহর প্রতি সম্মান প্রদর্শন?
কোথায় ঈমানের বলিষ্ঠতা ও সত্যতা?
শরীয়তের বিধান নিয়ে কেন এই ছিনিমিনি খেলা?

পুরুষের সৌন্দর্য দাড়ী মুন্ডানোতে নয়। আল্লাহ্ তা’আলা মানুষকে সৃষ্টি করে তাকে নারী জাতী থেকে আলাদা ও বৈশিষ্ট মন্ডিত করেছেন। পৌরুষত্বের পরিচয় দাড়ী প্রদান করে তার সৌন্দর্য্যকে প্রস্ফুটিত করেছেন। কিভাবে মানুষ তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে তাকে পরিবর্তন করে নিজেকে নারী জাতীর সাথে সাদৃশ্য করতে চায়? ইসলামের শত্র“দের সাথে নিজেকে মিলিত করতে চায়? আর ধারণা করে যে, এতেই রয়েছে অতিরিক্ত সৌন্দর্য্য ও ব্যক্তিত্ব!? দাড়ী মুন্ডন না করলে বা না কাটলে যেন পুরুষের সৌন্দর্যই ফুটে উঠে না। পুরুষকে দাড়ী দিয়ে যেন আল্লাহ ভুল করেছেন। (নাউযুবিল্লাহ্) তাই সেই ভুল শোধরাতে তারা যেন ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।

আল্লাহ্ বলেনঃ
ﺃﺃﻧْﺘُﻢ ﺃﻋْﻠَﻢُ ﺃﻡِ ﺍﻟﻠﻪُ
“তোমরাই কি বেশী জ্ঞান রাখ না আল্লাহ্ অধিক জ্ঞান রাখেন?” [ সূরা বাকারাঃ ১৪০]

দাড়ী বিহীন পুরুষ যদি অধিক সুন্দর হত তবে তা করতে আল্লাহ্ অপারগ ছিলেন না। কিন্তু তিনি এর মাধ্যমে পুরুষকে সম্মানিত ও মর্যাদাবান করতে চেয়েছেন। পার্থক্য করেছেন নারীদের থেকে।

সম্মানিত ভাই! 
আপনার এই কাজে কি দুনিয়াবী কোন উপকার আছে কি?
 পাবেন কি আখেরাতে কোন ছওয়াব-নেকী? 
কেন আপনি নিজেকে আল্লাহর ক্রোধের সম্মুখিন করছেন? 
কেন আপনি প্রতিদিন একটি অযথা পরিশ্রমে নিজেকে ক্লান্ত করছেন?
 কেন সময় ও অর্থের অপচয় করছেন?

হে আল্লাহ্ তুমি আমাদের সবাইকে তোমার সন্তুষ্টি মূলক কাজ করার তাওফীক দাও এবং যে কাজে তোমার অসন্তুষ্টি ও ক্রোধ রয়েছে তা থেকে আমাদেরকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান কর৷

আরো কিছু প্রাসাংগিক কথাঃ

* দাড়ি রাখা যাই হোক না কেন প্রকৃত মুসলমান দাড়ি রাখবে, এটাই স্বাভাবিক ।

এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কাটার সুযোগ শরীয়তে রয়েছে। হাদীসের কিতাবে পাওয়া যায়, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রা. ও হযরত আবু হুরায়রা রা. এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটেছেন।

আবু যুরআ রাহ. বলেন, আবু হুরায়রা রা. তাঁর দাড়ি মুঠ করে ধরতেন। এরপর এক মুষ্ঠির অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। (মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা ১৩/১১২, হাদীস : ২৫৯৯২; ২৫৯৯৯)

কিন্তু কোনো সহীহ বর্ণনায় এক মুষ্ঠির ভিতরে দাড়ি কাটার কোনো অবকাশ পাওয়া যায় না।

এখন আপনি নিজেই ভেবে দেখুন, আপনি কি করবেন। আল্লাহ ও রাসুল (সাঃ) এর নির্দেশ মানবেন নাকি সমাজের মানুষের কাছে লজ্জার ভয়ে কিংবা কাফির-মুশরিকদের অন্ধ অনুসরণ করবেন? ৷৷৷ সংগৃহিত। 

২০৮৫৫

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭