সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

কেউ যদি তার মুসলিম) ভাইকে বলে, আমার স্ত্রীদের মধ্যে যাকে চাও, আমি তোমার জন্য তাকে ত্বলাক্ব দেব।
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বুধবার ১৯/০৭/২০১৭

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘আবদুর রহমান ইবনু ‘আওফ (রাঃ) মদিনা্য় আসলে নাবী   সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামতাঁর এবং সা‘দ ইবনু রাবী‘ আল আনসারী (রাঃ)-এর মধ্যে ভ্রাতৃ বন্ধন গড়ে দিলেন। এ আনসারীর দু’জন স্ত্রী ছিল। সা‘দ (রাঃ) ‘আবদুর রহমান (রাঃ)-কে নিবেদনকরলেন, আপনি আমার স্ত্রী এবং সম্পদের অর্ধেক নিন। তিনি উত্তরে বললেন, আল্লাহ্ আপনার স্ত্রী ও সম্পদে বারাকাত দিন। আপনি আমাকে বাজার দেখিয়ে দিন। এরপর তিনি বাজারে গিয়ে পনির ও মাখনের ব্যবসা করে লাভবান হলেন। কিছুদিন পরে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর শরীরে হলুদ রং-এর দাগ দেখতে পেলেন এবং জিজ্ঞেস করলেন, হে ‘আবদুর রহমান। তোমার কী হয়েছে? তিনি উত্তরে বললেন, আমি এক আনসারী মেয়েকে বিয়ে করেছি। নাবীসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামজিজ্ঞেস করলেন, তুমি কত মাহর দিয়েছ। তিনি উত্তরে বললেন, খেজুরের অাঁটি পরিমাণ স্বর্ণ। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ওয়ালীমার ব্যবস্থা কর, একটি বকরী দিয়ে হলেও।[1] [২০৪৯] (আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৬৯৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৭০২)

 

[1] হাদীসটিতে আনসার মুহাজিরদের আন্তরিকতা, দ্বীনের কাজে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা, পরমুখাপেক্ষী না হওয়া, ব্যবসার গুরুত্ব, তাড়াতাড়ি বিবাহ করা, সহজ ও সুলভে বিবাহ করা, মাহর পরিশোধ করা ও বিবাহের সময় হলুদ ব্যবহার করার বৈধতা ও ওয়ালীমা খাওয়ানো ইত্যাদির প্রমাণ পাওয়া যায়।

বিয়েতে ‘মাহর’ অবশ্য দেয় হিসেবে ধার্য করার এবং তা যথারীতি আদায় করার জন্য ইসলামে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ {فَمَااسْتَمْتَعْتُمْبِهِمِنْهُنَّفَآتُوهُنَّأُجُورَهُنَّفَرِيضَةً} ‘‘তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের কাছ থেকে যে যৌন স্বাদ গ্রহণ কর, তার বিনিময়ে তাদের মাহর ফরয হিসেবেই আদায় কর’’- (সূরা আন্-নিসা ৪ঃ ২৪)।

নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিয়ের সময় অবশ্য পূরণীয় শর্ত হচ্ছে তা, যার বিনিময়ে তোমরা স্ত্রীর যৌন অঙ্গ নিজের জন্য হালাল করে নাও। আর তা হচ্ছে মাহর- (মুসনাদে আহমাদ)। উল্লেখ্য ইসলামী শারী‘আত অনুযায়ী মাহর আদায় করা আবশ্যকীয়। কিন্তু বিয়ের দিনেই আদায় করতে হবে এমনটি অপরিহার্য নয়। বিয়ের দিনে স্ত্রীর নিকট যাবার পূর্বে কিছু আদায় করতে হবে মর্মে ইমাম আবূ দাঊদ একটি হাদীস বর্ণনা করেছেন কিন্তু হাদীসটি দুর্বল, এতে তিনি বিয়ের পর আলী (রাযি.)-কে স্ত্রী ফাতিমা (রাযি.)-এর কাছে মাহরের কিছু না দিয়ে যেতে নিষেধ করেছেন। ... [হাদীসটি দুর্বল, দেখুন ‘‘য‘ঈফ আবী দাঊদ’’ (২১২৬)]।

মাহরের পরিমাণ কী হওয়া উচিত ইসলামী শারীআতে এ সম্পর্কে বিশেষভাবে কোন নির্দেশ দেয়া হয়নি, কোন সুস্পষ্ট পরিমাণ ঠিক করে দেয়া হয়নি। তবে এ কথা স্পষ্ট যে, প্রত্যেক স্বামীরই কর্তব্য হচ্ছে তার আর্থিক সামর্থ্য ও স্ত্রীর মর্যাদার প্রতি লক্ষ্য রেখে উভয় পক্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কোন পরিমাণ নির্দিষ্ট করে বেঁধে দেয়া। আর মেয়ে পক্ষেরও তাতে সহজেই রাযী হয়ে যাওয়া উচিত। আল্লাহর রসূলের যুগের অতি দরিদ্রতার কারণে মাহর হিসেবে এমনকি একটি লোহার আংটি দিতে, কিংবা পুরুষটির যা কিছু কুরআনের জানা আছে তা স্ত্রীকে শিখিয়ে দেয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। অপরদিকে কুরআন মাজীদে বলা হয়েছে- {وَآتَيْتُمْإِحْدَاهُنَّقِنْطَاراً}

‘‘এবং তোমরা মেয়েদের এক একজনকে ‘বিপুল পরিমাণ’ ধন-সম্পদ মাহর বাবদ দিয়েছ’’- (সূরা আন্-নিসা ৪ঃ ২০)। এ আয়াতের ভিত্তিতে বিপুল পরিমাণ সম্পদ মাহর বাবদ দেয়া জায়িয প্রমাণিত হচ্ছে।

আমাদের ভারতবর্ষে ‘মাহরে ফাতেমী’ নামে একটি কথা শুনা যায়। এরূপ কথা মূল্যহীন কারণ রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আলী এর সামর্থ্যের দিকে দৃষ্টি রেখেই তাঁর মেয়ে ফাতিমার জন্য মাহর নির্দিষ্ট করেছিলেন। আর ‘মাহরে ফাতেমী’ বলে ইসলামী শারী‘আতের মধ্যে কোন বিধান নেই। অতএব ‘মাহরে ফাতেমী’ অনুসরণ করার কোনই যৌক্তিকতা নেই।

দুঃখজনক হলেও সত্য বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে একটি কুসংস্কার চালু হয়েছে, তা হচ্ছে এই যে, মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হয় মাহরের পরিমাণ যেভাবেই হোক না কেন বেশী করতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ বলতে পারি যেখানে ছেলের পাঁচ হাজার প্রদান করার সামর্থ্য রয়েছে সেখানে দু’লক্ষ/ তিন লক্ষ যেভাবেই হোক লিখে নিতে হবে। এ ভাবনায় যে, স্বামী যদি কোন সময় মেয়েকে ত্বলাক দিতে চায়, উভয়ের মাঝে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয় তাহলে অতি সহজেই স্বামীকে যেন কাবূ করা যায়। অনেক সময় মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয় মাহর তো আদায় করতে হয় না অতএব বেশী লিখতে অসুবিধা কী। এ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আমাদের সমাজের এক শ্রেণীর লোক মাহর আদায় করে না এবং এটিকে তুচ্ছ ব্যাপার মনে করে প্রকারান্তরে বিয়ের ক্ষেত্রে ইসলামী শারী‘আতের একটি অন্যতম বিধানকে অগ্রাহ্য করে এবং নিজেদের স্বার্থ উদ্ধার করার চেষ্টা চালায়। এটাকে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূলের নির্দেশের বিরুদ্ধে এক প্রকারের ধৃষ্টতা বললে অত্যুক্তি করা হবে না।

২৮৮

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭