সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

মুসলিম নারী উত্তরাধিকারী হিসেবে কতটুকু সম্পত্তি পেতে পারে (হোসাইন আহমদ)
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বুধবার ০৭/০২/২০১৮

ইসলাম একটি দ্বীন (পরিপূর্ণ জীবন প্রণালী) ইসলাম নামক দ্বীন প্রায় ১৪ বছর আগেই নারীদের পুরুষের সমান উত্তরাধিকার প্রদান করেছে। জন্য নারীদের কোনো আন্দোলন করতে হয়নি। অথচ নারীদের অধিকার আদায়ের জন্য তাদের আন্দোলন করতে হয়েছে। কেট মিলেট, জার্মেন গ্রিয়ার, এ্যানি নুরাকিন, মেরি উলস্টন, এ্যানি বেসান্ত মেরি প্যানকহার্স্ট, মারগারেট সাঙ্গার প্রমুখ নারীনেত্রীদের। ক্রাবাইট বলেন, তিনি মুহাম্মাদ সা: সম্ভবত পৃথিবীর ইতিহাসে নারী অধিকারের শ্রেষ্ঠ প্রবক্তা ছিলেন) হজরত মুহাম্মদ সা: আল্লাহ তায়ালার কাছ থেকে ওহি প্রাপ্ত হয়ে বলেছেন, ‘বাবা-মা এবং আত্মীয় স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পদে পুরুষের অংশ রয়েছে এবং বাব-মা আত্মীয় স্বজনের পরিত্যক্ত সম্পদে নারীরও অংশ রয়েছে, তা অল্পই হোক বা বেশি হোক, এক নির্ধারিত অংশ।’ (সূরা নিসা : ০৭)

 

* কুমারী বিবাহিতা এবং বিধবা নারীর একই বিধান।

* নারী পাঁচ জায়গায় উত্তরাধিকার পাবে (মা-বাবা, ভাই, স্বামী এবং ছেলের)

* নারীরা তাদের নিকটাত্মীয়দের পরিত্যক্ত সম্পদে তেমন অংশীদার হয় যেমন হয় পুরুষেরা।

বাব-মা নিকট আত্মীয়দের সম্পদে ইসলামই প্রথম নারীদের অধিকার দেয়। আউস ইবনে সাবেত মারা গেলে তার চাচাত ভাই সব সম্পদ নিয়ে নেয়। নবীজিকে বলা হলে নবীজি ওহি দিয়ে সম্পদ বণ্টন করেন। স্ত্রী আটভাগের একভাগ, ছেলে অর্ধেক এবং মেয়েদুটিকে সমান করে বণ্টন করে দিলেন। চাচাত ভাই বঞ্চিত হলো।

 

আল-কুরআন আরো বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তায়ালা তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের (অংশ পাওয়া) সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, এক ছেলের অংশ হবে দুই মেয়ের মতো; আর যদি দুইয়ের বেশি মেয়ে থাকে তবে তারা মৃত ব্যক্তির ত্যাজ্য সম্পদের তিনভাগের দুইভাগ পাবে। আর যদি একজন মেয়ে হয় তবে সে অর্ধেক পাবে। মৃত ব্যক্তির সন্তান থাকলে তার বাবা-মায়ের ছয়ভাগের একভাগ করে পাবে। মৃত ব্যক্তির সন্তান না থাকলে মা-বাবা ওয়ারিশ হলে তবে তার মা পাবে তিনভাগের একভাগ, যদি মৃত ব্যক্তির কোনো ভাইবোন থাকে তাহলে তার মা পাবে ছয়ভাগের একভাগ অসিয়ত লোন পরিশোধের পর।’ (সূরা নিসা : ১১)

* একজন পুরুষ দুইজন নারীর সমান। এখানে নারী পেল পুরুষের অর্ধেক।

* যদি মৃতের ছেলে থাকে তবে মৃতের বাবা-মায়ের মধ্য থেকে প্রত্যেকের জন্য ত্যাজ্য সম্পদের ছয়ভাগের একভাগ করে।

 

* আর যদি মৃতের ছেলে না থাকে এক বাবা-মা ওয়ারিস হয়, তবে মা পাবে তিনভাগের একভাগ। এখানে নারী পেল পুরুষের দ্বিগুন।

যদি মৃত ব্যক্তির ছেলে সন্তান না থাকে তখন এক মেয়ে থাকলে অর্ধেক পাবে। দুইজন, তিনজন বা তার অধিক হলে তিনভাগের দুইভাগ পাবে। দুইজনের কথা সরাসরি বলা হয়নি। তারাও তিনভাগের দুইভাগ পাবে। ব্যাপারে রাসূল সা:-এর সিদ্ধান্ত বিদ্যমান।

 

জাবের ইবন আবদুুল্লাহ রা: বলেন, সাদ ইবন রাবির স্ত্রী দুই মেয়ে নিয়ে নবীজির কাছে এসে বলেন, হে আল্লাহর রাসূল সা:! মেয়েদ্বয় সাদের। সে আপনার সাথে ওহুদের যুদ্ধে অংশ নিয়ে শহীদ হয়েছেন। এদের চাচা সম্পদ নিয়ে নিয়েছে। সম্পদ না থাকলে তাদের বিয়ে দেয়া যাবে না। নবীজি ওহির জন্য অপেক্ষা করেন। তখন সূরা নিসার ১১ থেকে ১৪ আয়াত নাজিল হয়। রাসূল সা: বলেন, সাদের ভাইকে নিয়ে আস। তিনি তাকে বললেন, এদের দুইবোন সম্পদের তিনভাগের দুইভাগ, এদের মাকে আটভাগের একভাগ দাও অবশিষ্ট তুমি নাও। (সুনান আবু দাউদ, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ-২৭২০) ভাই আপন ভাইয়ের সম্পদ পাচ্ছে, মেয়ে বাবার পাচ্ছে স্ত্রী স্বামীর পাচ্ছে। কেউ কারো অংশ দখল করছে না।

 

তোমরা তোমাদের স্ত্রীগণ যা রেখে গেছে তার অর্ধেক পাবে, যদি তাদের কোনো সন্তান না থাকে। আর সন্তান যদি থাকে তাহলে তোমরা এক-চতুর্থাংশ পাবে তখন, যখন কৃত অসিয়ত পূর্ণ করা হবে আর যে ঋণ করে গেছে তা আদায় করা হবে। তোমাদের স্ত্রীগণ তোমরা যা রেখে গেছ তার এক-চতুর্থাংশ পাবে, যদি তোমাদের সন্তান না থাকে। আর যদি সন্তান থাকে তাহলে তারা আটভাগের একভাগ পাবে তখন, যখন অসিয়ত পূর্ণ ঋণ আদায় করা হবে। যার সম্পদ বণ্টন করা হবে সে যদি নিঃসন্তান হয় এবং তার মা বাবা জীবিত না থাকে, কিন্তু তার একভাই বা একবোন থাকে তাহলে তারা ছয়ভাগের একভাগ করে পাবে। আর যদি ভাই বোন দুইজনের অধিক হয় তাহলে সমস্ত সম্পদের এক তৃতীয়াংশে তারা সব শরিক হবে তখন, যখন অসিয়ত পূর্ণ ঋণ আদায় করা হবে।’ (সূরা নিসা : ১২)

 

* যদি মৃতের ছেলে বা স্ত্রী না থাকে এবং শুধু একভাই বা একবোন থাকে তবে উভয়ই ছয়ভাগের একভাগ করে পাবে। এখানে নারী পুরুষ পেল সমান-সমান, স্বামী মৃতা স্ত্রীর সন্তান না থাকলে স্ত্রীর সম্পদের অর্ধেক পাবে। অবশিষ্ট অর্ধেক বাকি ওয়ারিশদের মাঝে বণ্টন হবে, অবশ্যই লোন অসিয়ত পূরণ করার পর। যদি সন্তান থাকে তাহলে এক-চতুর্থাংশ পাবে। অবশিষ্ট অন্যান্য ওয়ারিশরা পাবে।

স্ত্রী মৃত স্বামীর সন্তান না থাকলে স্বামীর সম্পদের এক চতুর্থাংশ পাবে। অবশ্যই লোন অসিয়ত পূরণ করার পর। যদি সন্তান থাকে তাহলে আটভাগের একভাগ পাবে। একাধিক স্ত্রী হলে আটভাগ থেকে বণ্টন হবে, আলাদা থেকে নয়।

 

গাইরা মুজার ক্ষতিকর না হয়আয়াতের শেষে উল্লেখ হয়েছে যদিও, তবুও ওয়ারিশি সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে সবদিকেই যথেষ্ট খেয়াল রাখতে হবে। শুধু এক তৃতীয়াংশে অসিয়ত কার্যকর হবে। বিশেষ অসিয়ত থাকলে তা সব ওয়ারিশের সম্মতি ছাড়া কার্যকর হবে না। উদ্ভট লোন-ঋণ দেখানো যাবে না।

 

তুমি বলো আল্লাহ তায়ালা সে ব্যক্তির ফতোয়া দিচ্ছেন যার সন্তান নেই, মা বাবা নেই, সে যদি মারা যায় তার যদি একবোন থাকে তবে সে অর্ধেক পাবে। অপরদিকে সে বোন যদি নিঃসন্তান হয় তাহলে ভাই ওয়ারিশ হবে। আবার যদি মৃত ব্যক্তির ওয়ারিশ দুইবোন হয় তাহলে তারা সে সম্পদের দুই তৃতীয়াংশ পাবে। আর যদি ওয়ারিস দুইয়ের অধিক ভাইবোন হয় তবে মেয়েদের এক অংশ আর পুরুষদের দুই অংশ হবে।’ (সূরা নিসা : ১৭৬)

 

নিঃসন্তান ব্যক্তির বাব-মাও জীবিত নেই এই হলো কালালাহ। কারো মতে, মৃত্যুকালে বাবা ছেলেহীন ব্যক্তি। ইবনে আব্বাস রা: বলেন, বাবা জীবিত থাক বা না থাক, মৃত্যুকালে যার ছেলে সন্তান নেই সে কালালাহ। ১২ নম্বর আয়াতে কালালাহ-এর ভাইবোন মানে বৈপত্রিয় ভাইবোন। আর ১৭৬ নম্বর আয়াতে ভাইবোন মানে সহোদর এবং তাদের অবর্তমানে বৈমাত্রিয় ভাইবোন।

 

পবিত্র কুরআনে উত্তরাধিকারের ছয়টি নির্ধারিত অংশ বর্ণিত হয়েছে। যথা- অর্ধেক, চারভাগের একভাগ, আটভাগের একভাগ, তিনভাগের একভাগ, ছয়ভাগের একভাগ এবং তিনভাগের দুইভাগ (সূরাহ নিসা- ১১, ১২, ১৭৬)

 

অংশগুলো লাভকারী ১২ জনের মধ্যে পুরুষ চারজন এবং নারী আটজন। এটা কি প্রমাণ করে ইসলাম নারীর প্রতি অবিচার করেছে? যদি তাই হতো তাহলে ১২ জন মিরাস লাভকারীর মধ্যে আটজন নারী অন্তর্ভুক্ত হতো না। শুধু কুরআনের একটি আয়াতের একটি বাক্য নিয়ে কথা বললে হবে না, সব আয়াত রাসূলের সা: সব সহিহ হাদিস একত্রিত করতে হবে।

 

তা ছাড়া সবক্ষেত্রে যে নারী পুরুষের চেয়ে কম পায় তা কিন্তু নয়। ক্ষেত্র বিশেষে পুরুষের চেয়ে নারী বেশি পায়। যেমন- কোনো ব্যক্তি যদি স্ত্রী, মেয়ে বাবা রেখে মারা যায় তাহলে স্ত্রী আটভাগের একভাগ পাবে, মেয়ে অর্ধেক এবং বাবা আসাবা হিসেবে বাকি সম্পদ পাবে। অনুরূপভাবে কোনো ব্যক্তি যদি স্ত্রী, মেয়ে এবং বাবা-মা রেখে মারা যায় তাহলে স্ত্রী আটভাগের একভাগ, বাবা-মা ছয়ভাগের একভাগ করে এবং মেয়ে অর্ধেক পাবে।

 

মৃত ব্যক্তির মা বাবা এবং ছেলেমেয়ে না থাকলে আর বৈপত্রিয় ভাই এবং বোন থাকলে বৈপত্রিয় ভাই বোন ছয়ভাগের একভাগ পায়।

মৃত ব্যক্তির সন্তানাদি থাকলে মা-বাবা সমান ভাগ পাবে এবং প্রত্যেকে পাবে ছয়ভাগের একভাগ। পুরুষ নারীর দ্বিগুন পায় জন্য যে, তাকে পরিবারের অর্থনৈতিক দায়িত্ব বহন করতে হয়। ইসলামে নারীর কোনো অর্থনৈতিক দায়িত্ব নেই। একজন নারীর ভরণ-পোষণ বাসস্থানের দায়িত্ব বহন করতে হয় বাবা বা ভাইকে, বিয়ের পর স্বামীকে।

 

নারীরা বিয়ের সময় মোহর পায়। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমরা স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর খুশি মনে দাও।’ (সূরা নিসা : ০৪)

৭১৪

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭