হকদারের অধিকার
এক বেদুইনের ঘটনা। গ্রাম্য এলাকার অধিবাসী সে। একেবারে আনাড়ি। সভ্যতা-সংস্কৃতির কোনো বালাই নেই তার মাঝে। রাসূলুল্লাহ সা.এর মান-মর্যাদা সম্পর্কেও অজ্ঞ ও অনভিজ্ঞ।
.
তার কাছ থেকে আল্লাহর রাসূল সা. একটি উট ধার নিয়েছিলেনা। কিছুদিন পর সে মদিনায় এসে রাসূলুল্লাহ সা.এর নিকট তার দেনার তাগাদা করে বসে। অত্যন্ত অভদ্র ভঙ্গিতে। সাহাবায়ে কেরামও তখন মসজিদে নববিতে উপবিষ্ট ছিলেন। তার এসব ফালতু কথাবার্তা শুনছিলেন তাঁরা।
.
ওই বেদুইনের কথার ভঙ্গি ছিল নেহায়েত রূঢ় ও রুক্ষ। সাহাবায়ে কেরাম তার এই বেআদবি সহ্য করতে পারলেন না। যেখানে তারা তাদের প্রিয়নবীর নির্দেশে জান দিতে প্রস্তুত, সেখানে তাঁর শানে এই অসম্মান?! তারা তাকে এই বেআদবির জন্য শাস্তি দিতে চাইলেন।
.
আল্লাহর রাসূল সা. সাহাবিদের মনোভাব বুঝতে পেরেছেন। ফলে তিনি তাদেরকে নিষেধ করতে গিয়ে বলেন,
(دعوه فإن لصاحب الحق مقالا)
- “এমনটি করো না। তার সেই বেআদবিকে মার্জনা করো। কারণ হকদারের জন্য শক্তকথা বলারও অধিকার আছে।”
.
রাসূলুল্লাহ সা. সাহাবায়ে কেরামকে নির্দেশ দিলেন,
-সেই বেদুইনকে তার উটের মত একটি উট দিয়ে দাও।
আরজ করা হল, আমাদের নিকট যে উট রয়েছে তা তার উটের চেয়ে উত্তম ও উন্নত জাতের।
সম্মানিত পাঠক! আমাদের প্রিয় রাসূল সা.এর চরিত্র লক্ষ করুন। তিনি বলেন, -ভালো যে উটটি রয়েছে তা সেই বেদুইনকে দেয়া হোক।
অত:পর রাসূলুল্লাহ সা. তাঁর উম্মতকে মহান চরিত্রের এক শিক্ষা দিলেন। ইরশাদ করেন,
(فإن من خيركم أحسنكم قضاء)
- “তোমাদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ লোক সেই ব্যক্তি যে মানুষের দেনাপাওনাকে উত্তম পদ্ধিতে আদায় করে।”
সুপ্রিয় পাঠক! উপরোক্ত ঘটনাটি সহিহ বুখারিতে এসেছে। সেই হাদিসটি বর্ণনা করেছেন আবু হুরায়রা রা.। এই ঘটনাটি লিখতে গিয়ে আমার মনে ধারণা এল, স্ইে বেদুইনের কাছ থেকে ধার নেয়ার প্রয়োজনই বা কি ছিল আল্লাহর রাসূল সা.এর?
.
আমি উলামায়ে কেরামের সামনে আমার প্রশ্নের কথা প্রকাশ করেছি, আল্লাহর রাসূল সা. পুরো একটি রাজ্যের প্রধান ছিলেন। সাহাবায়ে কেরাম রা. তাঁর জন্য প্রাণ উৎসর্গ করার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকতেন। উটের প্রয়োজন হলে তিনি একজন বেদুইনের পরিবর্তে কোনো এক সাহাবিকেই ইঙ্গিত করলে, একটি কেন কয়েকটি উট তাৎক্ষণিকভাবে তার খেদমতে হাজির করতেন। সাহাবায়ে কেরামদের মধ্যে অনেক ধনী সাহাবিও তো ছিলেন?!!
.
উলামায়ে কেরাম আমার এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন:
-এর মধ্যেও রাসূলুল্লাহ সা.এর উন্নত চরিত্রের একটি আলোকিত দিক পরিলক্ষিত হয়।
তিনি সা. যদি কোনো সাহাবির সাথে লেনদেন করতেন, তাহলে আশংকা ছিল, সে হয়ত ভক্তির কারণে তার অধিকারটাও ছেড়ে দিত। এতে তার ক্ষতি হয়ে যেত। ভালোবাসার কারণে সে তার হকের দাবি করতে দ্বিধা করত। এজন্য আল্লাহর রাসূল সা. তাঁর সাহাবিদের পরিবর্তে অপরিচিত লোকদের সঙ্গে লেনদেন করাকে অগ্রাধিকার দিতেন।
৪৯৬
০
০
কোন তথ্যসূত্র নেই
জ্ঞান ছাড়া চলে না বাদশাহী জ্ঞান ছাড়া চলে না বাদশাহী,......
শিক্ষণীয় গল্প মক্কা ও মদিনার মাঝামাঝি স্থানে মুযায়না গোত্রের লোকজন......
শিক্ষণীয় গল্প এক গরীব লোক এক থোকা আঙ্গুর নিয়ে, হযরত......
সৎ বন্ধু নির্বাচন মোহাম্মদ সোলাইমান কাসেমী সমাজে চলতে হলে বহু......
দক্ষতার গল্প খায়বারের ময়দানে উপস্থিত আল্লাহর রাসুল সা.। ইহুদিদের বিরুদ্ধে......
প্রচন্ড রোদের মধ্যে হযরত আবু বকর (রাঃ) তাঁর ঘর থেকে......
দক্ষতার শিক্ষণীয় গল্প রেষ্টুরেন্টে বসে এক হুজুর নাস্তা করছেন। হাত......
পরশে তাঁহার সোনা হল যারা নবী-রাসূল, সৎ ও নেক্কার লোক,......
অাল্লাহ মনের খবরও রাখেন ফুদালা। পুরো নাম ফুদালা ইবনু উমাইর......
চাঁদ নেমেছে আজ আমার ঘরে আল্লাহর রাসূল সা.এর ঘরে কয়েকদিন......