সংবাদ :
জাতীয় : জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত- বাংলাদেশের আকাশে আজ পবিত্র জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা গেছে, ১০ জুলাই রবিবার সারাদেশে পবিত্র ঈদুল আযহা উদযাপিত হবে ইসলামিক বিশ্ব : আরাফাতে খুতবা দিবেন শায়খ ড. মুহাম্মাদ আবদুল করীম , হজের খুতবা সরাসরি সম্প্রচার হবে বাংলাসহ ১৪ ভাষায় আন্তর্জাতিক : আন্তর্জাতিক কুরআন প্রতিযোগিতায় ৩য় স্থান অর্জনকারী সালেহ আহমদ তাকরিমকে সংবর্ধনা প্রদান করল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন

  • টেক্সট সাইজ
  • A
  • A
  • A
  • |
  • রং
  • C
  • A
  • A
  • A

অাল্লাহর ঘরের চাবি
প্রিন্ট
প্রকাশঃ : বৃহস্পতিবার ১০/০৫/২০১৮

অাল্লাহর ঘরের চাবি 

বায়তুল্লাহ শরিফের চাবি রাসূলুল্লাহ সা.এর পূর্বপুরুষ সর্দার কুচাই তার সন্তান আবদুদ্দারকে সোপর্দ করেছিল। আবদুদ্দারের বংশধররাই ওই চাবি বহন করে আসছিল। তারা যাকে ইচ্ছা কা‘বার ভিতরে প্রবেশের সুযোগ দিত, যাকে ইচ্ছা দিত না।
.
হিজরতের পূর্বে আল্লাহর রাসূল সা. যখন মক্কায় বসবাস করতেন তখন চাবি বহনকারী ছিল আবদুদ্দারেরই বংশধর উসমান ইবনু তালহা। রাসূলুল্লাহ সা. তাকে বলেন, 

-“হে উসমান! বায়তুল্লাহর চাবিটা একটু দাও তো আমাকে। আমি বায়তুল্লাহর ভিতরে ঢুকতে চাই।” 

উসমান চাবি দিতে অস্বীকৃতি জানাল।

আল্লাহর রাসূল সা. উসমানকে বলেছিলেন:
(يا عثمان لعلك ترى هذا المفتاح يوما بيدي أضعه حيث شئت)
-“শুনো উসমান! একদিন এই চাবি আমার হাতে হবে। তখন আমি যাকে ইচ্ছা এ চাবি প্রদান করবো।”
.
সম্মানিত পাঠক! এটা তখনকার সময়ের কথা যখন মক্কায় কুরাইশের লোকজন রাসূলুল্লাহ সা.এর কঠোর শত্রু ছিল। উসমান ইবনু তালহা এবং তার বংশ-পরিবার তথা আবদুদ্দারের সন্তান-সন্ততিগণও ইসলামের ঘোর বিরোধী ছিল। কারো কল্পনায়ও আসতে পারে না তখন, একদিন যে মক্কা বিজয় হবে।  সর্বময় ক্ষমতা রাসুলুল্লাহ সা.এর হাতে চলে আসবে।  
.
তাই উসমান সেদিন খুব রূঢ় ভাষা ব্যবহার করেছিল। আল্লাহর রাসূল সা. তখন সহিঞ্চুতা প্রদর্শন করেছিলেন। উসমান বলেছিল:
(لقد هلكت قريش يومئذ إذا وذلت)
-“তার মানে, সেদিন কুরাইশ ধ্বংস ও লাঞ্চিত হয়ে যাবে।”
আল্লাহর রাসূল সা. তার জবাব দিয়েছিলেন:
 (بل عزت وعمرت يومئذ يا عثمان) 
“এমনটা হবে না হে উসমান! বরং সেদিন তো কুরাইশ আরো সম্মানিত ও আবাদ হবে।”
.
সময় পার হতে বিলম্ব হয় না। অষ্টম হিজরি সন দ্রুত চলে আসে এবং মক্কা বিজয় হয়ে যায়। এটাই সেদিন যার ভবিষ্যববাণী আল্লাহর রাসূল সা. প্রায় দশ বছর পূর্বে করেছিলেন। মক্কা বিজয়ের পূর্বে উসমান ইবনু তালহা ইসলাম কবুল করেছিলেন। 
.
আল্লাহর রাসূল সা. মক্কায় প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সোজা বায়তুল্লাহ শরিফে চলে গেলেন। তাওয়াফ করলেন এবং উসমানকে বললেন, 
-“উসমান! যাও, চাবি নিয়ে এসে আমাকে দাও।”
চাবি উসমান রা.এর মায়ের কাছে ছিল। উসমান রা. যখন চাবি চাইলেন তখন দিবো দিচ্ছি করতে লাগল। তবে ছেলে মায়ের কাছ থেকে খুব সুকৌশলে চাবি হাসিল করে রাসূলুল্লাহ সা.এর খেদমতে উপস্থাপন করলেন।
.
বায়তুল্লাহ শরিফের চাবি বহন করতে পারা অসাধারণ সম্মানের বিষয়। তখন ধারণা করা হচ্ছিল, আল্লাহর রাসূল সা. হয়ত চাবি অন্য কাউকে দিয়ে দিবেন। আবদুদ্দার বংশের অপরাধ ছিল অনেক। সেদিন আল্লাহর রাসূল সা. যাকেই এ সম্মান প্রদান করতে পারতেন এবং আজীবনের জন্য চাবির মালিক সে হয়ে যেত।  আব্বাস রা. সেই চাবি হাসিল করার আগ্রহ প্রকাশও করেন।
.
এদিকে আলী রা.ও রাসূলুল্লাহ সা.এর নিকট দরখাস্ত করছেন, 
-হাজ্বিদের পানি পান করানোর সম্মানের সাথে সাথে খানায়ে কা‘বা চাবি বহন করার সম্মানও দিয়ে দিন। 
আলী রা. এর যে-মর্যাদা ও অবস্থান নবী করিম সা.এর নিকট ছিল তা কারো অজানা নয়। তবে এই সময়টা হকদারকে তার হক দানের জন্য খুবই উপযুক্ত ছিল।
.
মুফাসসিরীন কিরাম লিখেছেন, তখনই নিম্নোক্ত আয়াতটি অবতীর্ণ হয়:
(إن الله يأمركم أن تؤدوا الأمانات إلى أهلها)
“আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে নির্দেশ দিচ্ছেন, আমানতসমূহ তার যোগ্য হকদারদের নিকট পৌঁছে দিন।  (সূরা নিসা, ৪:৫৮১।)
.
সম্মানিত পাঠক! এদিকে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হচ্ছে। ওদিকে জগতের সবচেয়ে উন্নত চরিত্রের অধিকারী শ্রেষ্ঠ আদমসন্তান সা.এর আওয়াজ চারিদিকে গুঞ্জরিত হয়,
 (أين عثمان بن أبي طلحة؟) 
-“উসমান ইবনু তালহা কোথায়?” 
উসমান ইবনু তালহা উপস্থিত হন। তখন আল্লাহর রাসূল সা.এর হাতে বায়তুল্লাহ শরিফের চাবি। লোকজন তাঁর হাতের দিকে তাকিয়ে আছে অপলক নয়নে। এই সম্মান কে অর্জন করে দেখি। কাকে চাবি দেয়া হবে। 
.
রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করলেন, 
(هاك مفتاحك يا عثمان)
- “হে উসমান! তোমার চাবি নাও।”
(اليوم يوم بر ووفاء, خذوها خالدة تالدة)
-“আজ কল্যাণ ও অঙ্গিকারপূরণের দিন। এই চাবি তোমরা সবসময়ের জন্য গ্রহণ করো।”
(لا ينزعها منكم إلا ظالم)
-“একমাত্র কোনো জালিমই তোমার খান্দান থেকে এই চাবি ছিনিয়ে নেয়ার সাহস করবে।”
.
সুপ্রিয় পাঠক! ওই ঘটনার পর চৌদ্দশত বছরের বেশি সময় অতিক্রান্ত হয়েগেছে। বায়তুল্লাহ শরিফের চাবি আজও সেই খান্দানের নিকট আছে। বিভিন্ন সরকার আসছে আর গেছে। আজ পর্যন্ত কেউ সেই খান্দানের কাছ থেকে এ সম্মান ছিনিয়ে নেয়ার দুঃসাহস করেনি। আজও উসমান ইবনু তালহা রা.এর সন্তানদের মধ্যে (শুয়াইবি) খান্দানের নিকট এই সম্মান বহাল রয়েছে এবং ইনশা আল্লাহ কেয়ামত পর্যন্ত থাকবে। আল্লাহর রাসূল সা. তাঁর উন্নত চরিত্রের সীল মেরে দিলেন ইতিহাসের ললাটে।

৪২৬

কোন তথ্যসূত্র নেই

আপনার জন্য প্রস্তাবিত

ইসলামিক ফাউন্ডেশন

To preach and propagate the values and ideals of Islam, the only complete code of life acceptable to the Almighty Allah, in its right perspective as a religion of humanity, tolerance and universal brotherhood and bring the majority people of Bangladesh under the banner of Islam

অফিসিয়াল ঠিকানা: অফিসিয়াল ঠিকানা : ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ, আগারগাঁও, শের-এ- বাংলা নগর, ঢাকা -১২০৭